
প্রিন্ট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ১০:৩২ এএম
স্ত্রী ও দুই শিশুকন্যাকে হত্যাচেষ্টা, পরে স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১২:২৩ এএম

ছবি : সংগৃহীত
কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্ম দিয়েছে মামুন আলী নামের এক যুবক। স্ত্রী ও দুই কন্যাশিশুকে মারাত্মকভাবে আঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালানোর পর নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যার দিকে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বর্তমানে চারজনই গুরুতর অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতরা হলেন হরিশংকরপুর এলাকার বাসিন্দা মামুন আলী (৩০), তার স্ত্রী মেঘলা (২৮), চার বছর বয়সী কন্যা কুলসুম ও দেড় বছর বয়সী জান্নাত।
স্থানীয় সূত্র ও পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে মামুন ও তার স্ত্রী মেঘলার মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। অভিযোগ রয়েছে, স্ত্রী মেঘলা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন, যা নিয়ে দাম্পত্য কলহ প্রায়ই চরমে উঠতো। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় এই উত্তেজনা ভয়াবহ রূপ নেয়। মামুন প্রথমে তার স্ত্রীকে মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। এরপর ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে দুই কন্যাশিশুকে আছাড় মেরে গুরুতর আহত করেন। শেষ পর্যন্ত নিজেই গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
প্রতিবেশীরা শব্দ শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে চারজনকেই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
প্রতিবেশী স্বপ্না খাতুন জানান, “মেঘলা আগে একবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল, পরে ফিরে আসে। তবে পারিবারিক সমস্যা মিটছিল না। আজকের ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।”
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চারজনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও মারপিটে তারা গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকেই এই সহিংস ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা গেছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ঘটনার গভীরে অনুসন্ধান চলছে।”
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় কুষ্টিয়া শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।