
প্রিন্ট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০২:৩০ এএম
অর্থ সংকটে উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল বন্ধ, সেবাবঞ্চিত রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম

অর্থ সংকটে উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল বন্ধ
অর্থ সংকটের কারণে কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন স্পেশালাইজড হাসপাতালটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (১৪ মে) হাসপাতালটি সরকার সংশ্লিষ্ট দফতরে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এই ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
কক্সবাজারে ইউএনএইচসিআরের যোগাযোগ কর্মকর্তা শারি নিজমান জানান, ২০২২ সালে জাপানের আর্থিক সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালটি স্থানীয় জনগণ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছিল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি থেকে ইউএনএইচসিআর তাদের সম্পৃক্ততা ধাপে ধাপে কমাচ্ছে। বর্তমানে এনজিও সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ’ অস্থায়ী ভিত্তিতে হাসপাতালটি পরিচালনা করছিল।
শারি নিজমান বলেন, “এই হাসপাতাল বন্ধ হওয়া মানবিক সহায়তার ক্রমহ্রাসমান প্রবণতারই প্রতিফলন, যা সরাসরি অত্যাবশ্যক স্বাস্থ্যসেবার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মিলিতভাবে সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানে কাজ করছে।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন বহির্বিভাগে গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা, দন্তরোগ, চক্ষু, ফিজিওথেরাপি, ল্যাবরেটরি টেস্টসহ নানা সেবা দেওয়া হতো। জরুরি বিভাগ ছিল ২৪ ঘণ্টা খোলা, এবং এসব সেবাই বিনামূল্যে প্রদান করা হতো। তবে এখন অর্থাভাবের কারণে হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ফ্রেন্ডশিপ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. শাহিনুর বলেন, “অর্থসংকটে আপাতত হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছে। ১৪ মে’র মধ্যে সবকিছু গুছিয়ে সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে যদি কোনো দাতা সংস্থা অর্থায়ন করে, তাহলে আবারও হাসপাতাল চালু করা হবে।”
এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, “হাসপাতালটি আপাতত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে যাবে। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে যারাই দায়িত্ব পাবে, তারাই সেবা কার্যক্রম চালু করবে। যতদূর জেনেছি, এই হাসপাতাল চালাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন।”
এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যসেবার অভাবে স্থানীয় বাসিন্দা ও রোহিঙ্গারা চরম দুর্ভোগে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।