Logo
Logo
×

সারাদেশ

সাইফুলের ‘গোপন জিম্মিশালা’ থেকে পাচারের জন্য অপহৃত ১৪ জনকে উদ্ধার

Icon

কক্সবাজার প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম

সাইফুলের ‘গোপন জিম্মিশালা’ থেকে পাচারের জন্য অপহৃত ১৪ জনকে উদ্ধার

ছবি : পাচারের জন্য অপহৃত ১৪ জনকে উদ্ধার

কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের উত্তর লম্বরী এলাকার সাইফুল ইসলাম নামের এক যুবকের নেতৃত্বে চিহ্নিত মানবপাচারকারিদের গোপন জিম্মিশালা থেকে ১৪ জনকে উদ্ধার করেছে বিজিবি। সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার পাচারের জন্য এই ১৪ জনকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থান থেকে অপহরণ করা হয়েছিল।

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর লম্বরী এলাকার এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান।

উদ্ধার ১৪ জন হলেন, আকতার হোসেন (২২), সাইফুল ইসলাম (১৬), খায়ের হোসেন (১৮), মোঃ রশিদুল ইসলাম (১৯), মোঃ আয়াজ (১৮), মফিদুল রহমান (১৫), শাহারিয়া মোহাম্মদ (১৯), মোঃ মোজাহের (২৮), মোঃ কায়ছার (২৩), লুৎফর রহমান কাজল (১৭), সিরাজুল হক (২৪), মোঃ আবু তালেব (৩৬), মোঃ কাসেম (২৬) ও মহিউদ্দীন বাবু (১৭)। এরা সকলেই বাংলাদেশী নাগরিক এবং বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানিয়েছেন, মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা লেঙ্গুরবিল এলাকার মৃত হাফেজ আহমদের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (৩৯) এর নেতৃত্বে একটি চক্র এদের জিম্মি করেছিল। এই সাইফুল ইসলাম সহ পাচারকারী চক্রের সদস্য আটক করতে গত ২৪ এপ্রিল গভীর সাগরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় টহলদল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়, তবে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলেও পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় একটি মানব ও মাদক পাচারের দায়ে মামলা দায়ের করা হয়।

উক্ত অভিযানে উদ্ধার করা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে মানব পাচারকারীদের গ্রেপ্তারে মেরিন ড্রাইভ এবং দমদমিয়া এলাকায় বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করা হয়। যেখানে লম্বরী এলাকায় সম্প্রতি বেশ কিছু বাংলাদেশী নাগরিককে অপহরণ করে গোপন স্থানে জিম্মি করে রাখার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে জানিয়ে বিজিবির এই কর্মকর্তা জানান, এর প্রেক্ষিতে শনিবার রাতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ১৪ জন অপহৃত বাংলাদেশী নাগরিককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়াদের কাছ থেকে জানা যায় চক্রটি দালালদের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে টেকনাফে নিয়ে আসে। পরে সুযোগ বুঝে টেকনাফ ও মেরিন ড্রাইভের বিভিন্ন স্থান হতে তাদেরকে অপহরণ করে দুর্গম লুকায়িত স্থানে আটকে রাখা হয়েছিল। তারপর থেকেই অপহরণকারীরা ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। এছাড়াও মুক্তিপন আদায়ে অপহরণকারী চক্রটি ভুক্তভোগীদের উপর অমানবিক শারীরিক নির্যাতনও করেছে। অত্যাচারের এ সকল অমানবিক ভিডিও চিত্র ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণের টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হতো।

উদ্ধার হওয়া মোহাম্মদ কাসেম ও মাহিন উদ্দিন নামে দুজন জানান,‘আমরা ইনানীতে বেড়াতে এসেছিলাম। সেখান থেকে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকের প্রলোভনে টেকনাফে গেলে আমাদের অপহরণ করে একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আরও বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখা হয়। আমাদের মারধর করে পরিবারের কাছে ভিডিও পাঠিয়ে এক লাখ টাকা করে আদায় করা হয়। এরপরও ১৮দিন ধরে আমাদের জিম্মি করে রাখা হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সাগরপথে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার পাচারের জন্য দালালদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া। অবশেষে বিজিবি এসে আমাদের উদ্ধার করে। আমরা তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।’

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। 

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিজিবি ১৪জনকে একটি ঘরের তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে উদ্ধার করেছেন বলে শুনেছি। পুলিশে সোপর্দ করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন