
প্রিন্ট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩৪ এএম
জুলাই যোদ্ধার চেক পেলেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫, ১১:১০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে চাকরিচ্যুত হওয়া সাবেক সাংবাদিক ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের জেলা শাখার সহ-সভাপতি আল হেলালকে দেয়া হয়েছে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে ১ লাখ টাকার অনুদান। তবে আন্দোলনের বিরোধী পক্ষ হিসেবে পরিচিত হেলালের হাতে সরকারি চেক তুলে দেওয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে সুনামগঞ্জে।
শনিবার (১০ মে) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার উপস্থিতিতে আল হেলালের হাতে চেকটি তুলে দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল। তবে জানা গেছে, আন্দোলনের বিরোধী অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও আহত সেজে তিনি এই অর্থ গ্রহণ করেছেন, যা নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলার আন্দোলনকর্মী ও সাধারণ মানুষ।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বলছেন, এই অনুদান শহিদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। আন্দোলনের সময় কেউ অর্থ বা স্বীকৃতির আশায় নামেননি, বরং ন্যায়ের জায়গা থেকে অংশ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন সাংবাদিক শহীদ নুর আহমেদ।
আল হেলাল দাবি করেছেন, তিনি কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, বরং একজন বাউলশিল্পী হিসেবে গান গেয়ে বেড়াতেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে আন্দোলনে তিনি চোখ ও হাতে আঘাত পেয়েছেন। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হেলালের নাম কখনো আন্দোলনকারীদের তালিকায় ছিল না। জেলা কমিটির অনুমোদনের আগেই প্রশাসন একতরফাভাবে কিছু নাম তালিকাভুক্ত করেছে, এবং সেই সুযোগেই হেলালের নাম ঢুকে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সাকিব।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জানান, চেক বিতরণের পর বিষয়টি তাদের নজরে আসে। তালিকাটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সমন্বয়ে গঠিত সদর উপজেলা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
সদর উপজেলার ইউএনও অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, তিনি একা যাচাই-বাছাই করেননি এবং তালিকাটি একটি যৌথ কমিটির মাধ্যমে প্রণয়ন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেন কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।
এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসন এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে চলছে দোষারোপ, আর সাধারণ মানুষের প্রশ্ন—আসলে কারা পাচ্ছে শহিদদের রক্তের মূল্য?