
প্রিন্ট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:০৮ এএম
মায়ের গায়ে স্ত্রী হাত তোলায় আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন এএসপি পলাশ সাহা : দাবি বড় ভাইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ০১:০৬ এএম

ছবি : সংগৃহীত
স্ত্রীর হাতে মায়ের প্রতি সহিংসতা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন চট্টগ্রামে কর্মরত র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পলাশ সাহা—এমনটাই দাবি করেছেন তাঁর বড় ভাই নন্দ লাল সাহা।
তিনি জানান, দুই বছর আগে পলাশ সাহার বিয়ে হয় সুস্মিতা সাহার সঙ্গে। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। পলাশের মা আরতি সাহা ছেলের সঙ্গে চট্টগ্রামে থাকতেন, যা স্ত্রী মেনে নিতে পারছিলেন না। প্রায়ই মাকে গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন স্ত্রী সুস্মিতা। তবে পলাশ নিজের মাকে রেখে দিতে চেয়েছিলেন এবং দুই পক্ষকেই ভালোবাসতেন।
নন্দ লাল বলেন, “ঘটনার দিন সকালেই স্ত্রীর হাতে আমার মা এবং ভাই শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হন। বিষয়টি পলাশ কোনোভাবেই মানতে পারেনি। আমাদের বিশ্বাস, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েই সে আত্মহত্যা করেছে।”
বুধবার (৭ মে) দুপুরে র্যাব-৭ সদর দপ্তর, চান্দগাঁও, চট্টগ্রামে নিজের অফিস কক্ষে পলাশ সাহার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে পাওয়া যায় একটি চিরকুট, যেখানে লেখা ছিল—“আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমি নিজেই দায়ী। কাউকে সুখে রাখতে পারিনি। বউ যেন স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে ভালো থাকে। মা’র দায়িত্ব দুই ভাই নিক। স্বর্ণ বাদে যা কিছু আছে, সব মায়ের জন্য। দিদি যেন সব কিছুর দেখভাল করে।”
ঘটনার সময় পলাশ একটি অভিযানের প্রস্তুতিতে ছিলেন। তিনি অস্ত্র সংগ্রহ করে নিজের কক্ষে প্রবেশ করেন। এরপরই সহকর্মীরা গুলির শব্দ শুনে সেখানে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। তার পাশে পড়ে ছিল ব্যক্তিগত অস্ত্র এবং চিরকুটটি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, “পলাশ সাহাকে দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মাথার পাশে গুলির মতো একটি ক্ষতচিহ্ন ছিল। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত প্রয়োজন।”
৩৭ বছর বয়সী পলাশ সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং ৩৭তম বিসিএস-এর মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন। এর আগে তিনি সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে সন্দ্বীপে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই ঘটনাকে ঘিরে পলাশের আত্মহত্যা, পারিবারিক কলহ এবং মানসিক চাপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সুস্থতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।