
প্রিন্ট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩৬ এএম
জিম্মি হওয়া চার রোহিঙ্গাকে ছেড়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৫, ১২:০৪ এএম

ছবি : সংগৃহীত
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে মাদক সংগ্রহ করতে গিয়ে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে জিম্মি হওয়া চার রোহিঙ্গা নাগরিককে অবশেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে তারা হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফিরে এসেছেন।
জিম্মি হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—আরাফাত উল্লাহ (২১), আনিস উল্লাহ (২২), মো. জাবের (১৪), এবং আনোয়ার সাদেক (২৭)। প্রত্যেকেই জাদিমোরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া সীমান্তবর্তী লালদিয়া চরে তারা আরাকান আর্মির হাতে আটক হন। ওই জায়গাটি মিয়ানমারের ভূখণ্ডে পড়েছে এবং সাধারণত মাদক পাচারকারীদের চলাচলের পথ হিসেবেই ব্যবহৃত হয়।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের টেকনাফ অফিসের সহকারী কর্মকর্তা এবং ২৭ নম্বর ক্যাম্প ইনচার্জ খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান নিশ্চিত করেছেন, চার রোহিঙ্গা নাগরিক ফিরে এসেছেন এবং এখন ক্যাম্প প্রশাসনের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, “প্রথম থেকেই আমরা আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছি, যার ফলে তারা শেষপর্যন্ত জিম্মিদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। মুক্তিপ্রাপ্তদের ক্যাম্প ইনচার্জের হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।”
তবে এই ঘটনায় বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের বক্তব্যে। হ্নীলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, “এই চারজন কোনোভাবেই জেলে ছিলেন না। তারা নিয়মিত মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনতে নদী পার হতো। ‘লালদিয়া’ মূলত মাদকপাচারকারীদের ঘাঁটি, সাধারণ জেলেরা ওখানে যায় না।”
এর বিপরীতে, জাদিমোরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ নূর দাবি করেছেন, “জিম্মিকৃতরা নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তখনই আরাকান আর্মি অস্ত্রের মুখে তাদের ধরে নিয়ে যায়। বাকি কয়েকজন পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।”
স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। সীমান্তে অপরাধ প্রবণতা ও মাদক পাচার রোধে নিয়মিত নজরদারির পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে মিয়ানমারের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।