
প্রিন্ট: ১৮ জুন ২০২৫, ১১:১২ এএম
কাফনের কাপড় পরে কুতুবদিয়াবাসীর অভিনব প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১১ এএম

ছবি : সংগৃহীত
ভয়াল ২৯ এপ্রিল উপলক্ষে কক্সবাজার শহরের জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে কাফনের কাপড় পরে অভিনব প্রতিবাদ জানায় কুতুবদিয়া উপজেলার বাসিন্দারা। দ্বীপের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা জোরালোভাবে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও কুতুবদিয়া-মগনামা ফেরি সার্ভিস চালুর দাবি তুলে ধরেন। কুতুবদিয়া সমিতি এবং কুতুবদিয়া টেকসই বেড়িবাঁধ ও ফেরি বাস্তবায়ন পরিষদের ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির শুরুতে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্মরণে একটি শোকর্যালি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়, যা এই দিনের তাৎপর্য আরও গভীর করে তোলে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া কুতুবদিয়াবাসী তাদের দৈনন্দিন দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরেন এবং টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে জনসম্মুখে প্রতিবাদী কণ্ঠে গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পী শাহীন আবরার। তার গানের কথায় উঠে আসে কুতুবদিয়ার মানুষের দীর্ঘদিনের বেদনা ও প্রত্যাশা। সবার মুখে মুখে প্রতিধ্বনিত হয়, "হোক প্রতিবাদ, মুক্তি চাই, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।"
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, কুতুবদিয়ার মানুষ আর বারবার প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পড়তে চায় না। তারা চায় কার্যকর পদক্ষেপ, বাস্তবায়নযোগ্য উদ্যোগ। কুতুবদিয়া সমিতির নেতৃবৃন্দ, সাবেক জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা একযোগে বলেন, দ্বীপের অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। দীর্ঘদিন ধরে বেড়িবাঁধের কাজ নামে বরাদ্দ এলেও বাস্তবে তার সুফল পায়নি স্থানীয় জনগণ।
এ সময় কুতুবদিয়া টেকসই বেড়িবাঁধ ও ফেরি বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক সাংবাদিক এহসান আল কুতুবী বলেন, কুতুবদিয়ার খেটে খাওয়া মানুষেরা আর গলার ফাঁস চায় না, তারা চায় নিরাপদ জীবন, চায় নিজের মাটিতে টিকে থাকার নিশ্চয়তা। তিনি কষ্টভরা কণ্ঠে বলেন, যদি আমাদের জন্য টেকসই বেড়িবাঁধ সম্ভব না হয়, তবে দ্বীপটিকে সাগরে বিলীন করে দিন— কিন্তু প্রতি বছর বরাদ্দ দেখিয়ে নাটক করবেন না।
কুতুবদিয়া সমিতির সভাপতি প্রফেসর গিয়াস উদ্দিন বলেন, এই দ্বীপের মানুষ শুধুই একটি স্থায়ী বেড়িবাঁধ বা ফেরি নয়, তারা বেঁচে থাকার অধিকার চায়, নিরাপদ ভবিষ্যত চায়। শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের বিষয়েও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
এই অবস্থান কর্মসূচি থেকে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। প্রয়োজনে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি গ্রহণের কথাও বলেন তারা। ভয়াল ২৯ এপ্রিল স্মরণে কুতুবদিয়া ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত দ্বীপবাসীরা নানা আয়োজনে দিনটি পালন করেন। তাদের সবার একই দাবি— কুতুবদিয়া রক্ষায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ এবং নিয়মিত ফেরি সার্ভিস চালু।