
প্রিন্ট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সচেতনতা বাড়াতে চালু হলো বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ভ্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বিপন্ন মেছো বিড়ালসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চালু হয়েছে একটি বিশেষ সচেতনতামূলক ভ্যান। পরিবেশবান্ধব এই উদ্যোগটি ২১টি জেলাজুড়ে ঘুরে বেড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের গুরুত্ব জানাবে এবং সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছড়াবে।
আজ যশোরে এই ভ্যানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, যশোর সামাজিক বন বিভাগের সংরক্ষক, বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ পরিবেশবাদী সংগঠন ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বন্যপ্রাণীর প্রতি আমাদের সহানুভূতিশীল মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। মেছো বিড়ালসহ অনেক প্রাণী মানুষের ক্ষতি করে না, কিন্তু ভুল ধারণার কারণে আমরা তাদের মেরে ফেলি। এই প্রাণীগুলো প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, বিশেষ করে গঙ্গা অববাহিকার অঞ্চলটি জীববৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ, কিন্তু এখানে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উদ্যোগ তুলনামূলকভাবে কম ছিল। এই অঞ্চলে মেছো বিড়াল, ধূসর হনুমান, খেকশিয়াল, মদনটাক, মানিকজোড়, ঈগলসহ বহু বিরল প্রাণী রয়েছে। এমনকি পদ্মা ও এর শাখা নদীতে দেখা মেলে বিপন্ন ঘড়িয়াল ও বিলুপ্তপ্রায় কুমিরেরও।
এক গবেষণা অনুসারে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ২৬০ প্রজাতির পাখির আবাস রয়েছে—যা দেশের মোট পাখি প্রজাতির প্রায় ৪০ শতাংশ। কিন্তু অপরিকল্পিত বসতি, বনভূমি ধ্বংস এবং খাদ্যের অভাব এই বন্যপ্রাণীদের টিকিয়ে রাখাকে ক্রমেই কঠিন করে তুলছে। ফলে প্রাণীরা মানুষের কাছে চলে এসে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে, যা প্রাণীর মৃত্যুর হার বাড়িয়ে দিয়েছে। মেছো বিড়াল এর একটি উদাহরণ, যশোর-ফরিদপুর অঞ্চলে নিয়মিতভাবেই তাদের মৃত্যু ঘটত।
এই বিষয়টি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নজরে আসার পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বন্যপ্রাণী রক্ষায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এই বছর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পালিত হয়েছে ‘বিশ্ব মেছো বিড়াল দিবস’। সেই ধারাবাহিকতায় চালু হওয়া সচেতনতামূলক ভ্যানটি প্রাণী সংরক্ষণে একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
উদ্যোক্তাদের আশা, এই ভ্যানটি সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবে প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে।