
প্রিন্ট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৫ এএম
বৈষম্যবিরোধীরা রক্ষীবাহিনীর মতো আচরণ করছে : ছাত্রদল নেতা নাছির

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি তীব্র অভিযোগ তুলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, এই প্ল্যাটফর্ম এখন রীতিমতো রক্ষীবাহিনীর মতো উগ্র আচরণ করছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে ছাত্রদলের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
নাছির বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একসময় গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক হলেও, এখন তা অভিভাবকহীন, নেতৃত্বহীন একটি বিশৃঙ্খল সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তারা চাঁদাবাজি, দখলবাজি এমনকি হত্যাকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়ছে। আমাদের এক ছাত্রদল নেতাকেও তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই আন্দোলনের নাম ভাঙিয়ে বর্তমানে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়েছে। অথচ কোনো নেতাই কোনো দায়িত্ব নিচ্ছেন না। সবাই দায় এড়িয়ে যাচ্ছে, অপরাধ করে চলেছে। এদের আচরণ শেখ মুজিবের রক্ষীবাহিনীর মতো—উগ্র, সহিংস, ভয়ভীতি প্রদর্শনকারী। এই প্ল্যাটফর্মটি বিলুপ্ত করা এখন সময়ের দাবি।”
নাছির উদাহরণ টেনে বলেন, “যেমন পিতামাতাহীন সন্তান অসহায় হয়ে পড়ে, তেমনিভাবে এই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনও এখন অগঠিত এবং দিশাহীন। তারা আবারও দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় লিপ্ত।”
সম্মেলনে তিনি শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের কথা তুলে ধরে বলেন, “তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচিত হোক। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে আজকের নির্বাচন তারই উদাহরণ। আমরা ছাত্র রাজনীতিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে এগিয়ে নিতে চাই।”
তিনি জানান, ভবিষ্যতে আড়াই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নির্বাচন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে ৬০টি মাদ্রাসাও রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “আমরা তাদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তুলছি।”
নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিয়ে নাছির বলেন, “গত ১৬ বছরে নারী শিক্ষার্থীরা অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল। কিন্তু আজ আমরা তাদের সরব উপস্থিতি দেখেছি। তারা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছে—এটাই প্রমাণ করে, পরিবর্তনের পথে তারা এগিয়ে এসেছে। দেশ বদলাতে হলে নারী ভোটারদের ভূমিকা অপরিহার্য।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছরে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এই সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্যই হলো গণতন্ত্রের সংস্কৃতি চর্চাকে শক্তিশালী করা।”
নির্বাচনে ২,০৪৮ ভোটারের মধ্যে ১,৩৬২ জন শিক্ষার্থী ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। অনেক শিক্ষার্থীর জন্য এটি ছিল জীবনের প্রথম ভোট, যা নিয়ে তারা দারুণ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
ভোট গণনা শেষে সন্ধ্যায় ফল ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি পদে চারজন প্রার্থীর মধ্যে রাকিবুল ইসলাম রাকিব ৮৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদক পদে ইমরুল কায়েস কাব্য ৩৮২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তৌহিদুল রহমান আওয়াল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ, এবং মোকসেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।