
প্রিন্ট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১১:২৫ পিএম
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভায় মহিলা লীগ নেত্রী, বললেন কোনোদিন আ.লীগ করিনি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫০ পিএম

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভায় আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উইম্যান চেম্বারের সভাপতি ফাতেমা তুজ জোহরা আক্তার।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিয়ে এবং নিজের রাজনৈতিক পরিচয় অস্বীকার করে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উইম্যান চেম্বারের সভাপতি ফাতেমা তুজ জোহরা আক্তার। শনিবার (১৯ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
সভায় বক্তব্যকালে তিনি বলেন, আমি কোনো দিন কোথাও মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কথাটি বলিনি। আমাকে এ পদ দেওয়া হয়েছিল নেতাদের বউদের সম্মান দেওয়ার জন্য। আমি কখনো আওয়ামী লীগ অফিসে যাইনি, কোনো মিটিংয়েও যাইনি।
তিনি আরও জানান, জাতিসংঘে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হয়েও তিনি যান এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি হিসেবে, এবং মহিলা আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি চাইলে বলা হয়েছিল মেয়াদ শেষে পদটি এমনিতেই শেষ হবে।
এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তোলে। অনেকেই ফাতেমা তুজ জোহরার অতীত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে সমালোচনা করেন। অনেকে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা বা সরকারের সুবিধাভোগী হয়েও এখন নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করা রাজনৈতিক ধোঁকাবাজি।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, তিনি আওয়ামী লীগ নেত্রী কিনা, সেটা তিনি নিজেই পরিষ্কার করবেন।
গণঅধিকার পরিষদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, অর্থের বিনিময়ে কেউ কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছেন। যারা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে ফ্যাসিবাদের দোসরদের রক্ষা করছেন, তারা জাতির সাথে প্রতারণা করছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র হয়ে ওঠে। একজন শিক্ষক ফৌজিয়া জলিল লেখেন, এভাবেই আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়েছে।
উৎপল ভট্টাচার্য্য মন্তব্য করেন, নেতার বউ বড় নেত্রী, সুবিধাভোগীরা আসলে লীগের ছিল না।
রিনুদ খান লিখেছেন, আওয়ামী লীগের আজকের এই দুরবস্থা এই ধরনের বিশ্বাসঘাতকদের কারণেই।
উল্লেখ্য, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ঘনিষ্ঠ এই পরিবার কিশোরগঞ্জে উইম্যান চেম্বার অব কমার্সের অনুমোদন পায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, যেখানে দেশের অধিকাংশ জেলায় এমন চেম্বার নেই। ফাতেমা তুজ জোহরা বিগত এক দশক ধরে উইম্যান চেম্বারের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তার এই অবস্থান এবং বক্তব্য নিয়ে এখন সর্বমহলে প্রশ্ন উঠেছে—নেতার পরিচয়ের ছায়ায় পদ পাওয়ার পর নিজেই সেই পরিচয় অস্বীকার, তবে কি রাজনীতির সুবিধাভোগীদের নতুন রূপ?