
প্রিন্ট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
কক্সবাজার-মহেশখালী নৌ রুটে পরীক্ষামুলক সী ট্রাক চলাচল শুরু

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২০ পিএম

কক্সবাজার-মহেশখালী নৌ রুটে পরীক্ষামুলক সী ট্রাক চলাচল শুরু
কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে যাতায়াতে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো শুক্রবার, পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া একটি আধুনিক সী-ট্রাকের মাধ্যমে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্যোগে চালু হওয়া এই সী-ট্রাকটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ২৫০ জন। এটি স্থায়ীভাবে চালু হলে প্রায় ৪ লাখ দ্বীপবাসীর যাতায়াত সহজ হওয়ার পাশাপাশি পর্যটকদেরও দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে এবং দ্বীপের অর্থনীতিতে নতুন গতি আসবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে, সী-ট্রাকটি ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে চলবে। কোনো সমস্যা না হলে ২৫ এপ্রিল থেকে বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে। যাত্রী ভাড়া এখনো নির্ধারিত না হলেও, সাফল্যের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে ফেরি সার্ভিস চালুরও পরিকল্পনা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, সি-ট্রাকে যাতায়াতে জনপ্রতি ভাড়া কত হবে তা এখনও নির্ধারণ হয়নি। পরীক্ষামূলক যাত্রায় সফল হওয়ায় খুব শিগগিরই এ নৌপথে সি-ট্রাকটি স্থায়ী করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে ফেরি যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
গবেষক ও লেখক অধ্যাপক মকবুল আহমেদ জানান, মহেশখালী দ্বীপ শুধু পাহাড়-সমৃদ্ধ নয়, এটি নৈসর্গিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক আদিনাথ মন্দির, লবণ উৎপাদন ও মিষ্টি পানের জন্যও প্রসিদ্ধ। প্রতি বছর হাজারো পর্যটক এই দ্বীপে যাতায়াত করেন, পাড়ি দেন বাঁকখালী নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনার নয়নাভিরাম নৌপথ। তবে এতদিন ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নৌপথ ছিল বিপদসংকুল, বিশেষ করে বর্ষাকালে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকত বেশি। এছাড়া স্পীডবোটের দীর্ঘ লাইন, দুর্ব্যবহার, অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও জেটিঘাটে অনিয়ম ছিল নিত্যদিনের অভিযোগ।
এসব ভোগান্তি দূর করতেই বিআইডব্লিউটিএর উদ্যোগে চালু হলো সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত আধুনিক সী-ট্রাক। কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া জেটি থেকে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ছেড়ে সী-ট্রাকটি ১টায় মহেশখালীর সদ্য নির্মিত পন্টুন জেটিতে পৌঁছালে আনন্দে ভাসে স্থানীয়রা। প্রথমবারের মতো এমন সী-ট্রাক দেখে দ্বীপবাসীর উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।
দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেটের হাত থেকে মুক্ত হয়ে সরকারি সেবায় আধুনিক জলযান পেয়ে দ্বীপবাসী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সরকারের প্রতি। তাদের আশা, এই উদ্যোগ নিরাপদ যাতায়াতের পাশাপাশি দ্বীপে পর্যটন উন্নয়ন ও অর্থনীতিকে প্রাণ দেবে।