
প্রিন্ট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫৩ পিএম
পমেকে ৩ দফা দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসক-নার্সদের কর্মবিরতি, ভোগান্তিতে রোগীরা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম

পমেকে চিকিৎসকের ওএসডি প্রত্যাহারসহ ৩ দফা দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসক-নার্সদের কর্মবিরতি। ছবি : সংগৃহীত
চিকিৎসকের ওএসডি (অবসারপ্রাপ্ত বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আদেশ প্রত্যাহারসহ ৩ দফা দাবিতে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ (পমেক) হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে বহিঃবিভাগ চিকিৎসা ও রোগী ভর্তি কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্সরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন, ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত সোমবার, যখন পানিতে ডুবে অসুস্থ হয়ে পড়া পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হোসাইন মোহাম্মদ আশিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে আইসিইউতে ভাঙচুর ও বিক্ষোভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্দেশে মৃত শিক্ষার্থীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে ৮ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে রয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. খালেদুর রহমান। এরপর মরদেহ জানাজা শেষে পাঠানো হয় তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে।
পরদিন শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নামে, লেবুখালী টোলপ্লাজায় পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তারা দায়ী চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের বিচারের দাবি জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. কাজী রফিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, চিকিৎসার চরম অবহেলায় আমরা আমাদের এক সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীকে হারিয়েছি। এটি পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকে গভীরভাবে আঘাত করেছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. এএসএম শামীম আল আজাদকে ওএসডি করে। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্সরা বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেন।
তাদের তিন দফা দাবি হলো—
১. ডা. শামীম আল আজাদের ওএসডি আদেশ প্রত্যাহার,
২. চিকিৎসক ও নার্সদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা,
৩. নবনির্মিত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল চালু করে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করা।
আন্দোলনরত চিকিৎসকরা বলেন, সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়ার পরও মৃত্যুর ঘটনায় অযথা দায় চাপানো হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হতেই একজন দক্ষ চিকিৎসককে ওএসডি করায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সিভিল সার্জন ও তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. খালেদুর রহমান জানান, তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতের কাজ চলছে এবং এটি নিরপেক্ষভাবেই সম্পন্ন হবে। তবে ওএসডি বিষয়ে মন্তব্য তার এখতিয়ারভুক্ত নয় বলেও জানান তিনি।