
প্রিন্ট: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০১:৫২ পিএম
নরসিংদীতে চিকিৎসা নিতে এসে হামলার শিকার জুলাই অভ্যুত্থানে চোখ হারানো তৌহিদ

নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম

ফাইল ছবি
জুলাই গণঅভূত্থানে রাজপথের আন্দোলনে দুই চোখ হারানো তৌহিদ উদ্দিন ভূইয়ার উপর নরসিংদী ডায়াবেটিক হাসপাতালে হামলা, মারধর এবং তার শশুরকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা শ্যালিকাকে বাথরুমে বন্ধি করাসহ সাথে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন ও হাসপাতালের স্টাফদের বিরুদ্ধে। পরে সদর থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।
উক্ত ঘটনায় তৌহিদ উদ্দিন বাদি হয়ে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) নরসিংদী ডায়াবেটিক হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুল আমিন, সদস্য মো. জহিরুল হক ভূইয়া, মো. নাজমুল হক ভূইয়ার নাম উল্লেখসহ আরও ১০/১২ জন অজ্ঞাত করে নরসিংদী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজহার সূত্রে জানাযায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজপথের সৈনিক তৌহিদ উদ্দিন ভূইয়ার শ্বশুর শেখ তোতা মিয়া (৬০) প্যরালাইজড হওয়ায় দীর্ঘ ০৯ দিন ঢাকা বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। পরে গত বৃহস্পতিবার ১০/৪/২০২৫ তারিখ বেলা ১২ টার দিকে তার শ্যালিকা মুক্তা আক্তার শশুর তোতা মিয়াকে নরসিংদী ডায়াবেটিক হাসপাতালে থেরাপি দেওয়ার জন্য নিয়ে গেলে উক্ত হাসপাতালে ডাক্তার চেম্বারে থাকা সত্বেও অজ্ঞাতনামা স্টাফরা মুক্তাকে বলে হাসপাতালে ডাক্তার নাই।
পরে তিনি ডাক্তারের কক্ষে যেতে চাইলে স্টাফরা ক্ষীপ্ত হয়ে তাদের সাথে খুব খারাপ আচরন করে। একপর্যায়ে মুক্তা রোগীকে নিয়ে ডাক্তারের কক্ষে প্রবেশ করে। ডাক্তার দেখানো শেষে বের হওয়া মাত্রই হাসপাতালের স্টাফরা আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে মো. জহিরুল ইসলামকে জানালে তার নির্দেশে স্টাফরা তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
পরে অসুস্থ্য রোগীকে রেখে মুক্তাকে হাসপাতালের একটি ওয়াশরুমে বন্ধী করে রাখে। এই ঘটনায় শ্যালিকা মুক্তা ওয়াশরুমে বন্ধি থাকা অবস্থায় বিষয়টি তৌহিদকে জানায়। তৌহিদ হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারে তার শ্যালীকাকে ওয়াশরুম থেকে বের করা হয়েছে।
পরে বিষয়টি জহিরুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি ও তার স্টাফরা তৌহিদকেও গালিগালাজসহ শরীরে হাত তুলে। এরপর বাকি আসামিরাও লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তৌহিদকে এলোপাথারী কিল-ঘুষি মেরে নীলাফুলা জখম করে এবং শ্যালিকা মুক্তার গলায় থাকা স্বর্ণের এক ভরি ওজনের চেইন ও আট আনা ওজনের কানের দোল ছিনিয়ে নেয়।
বিষয়টি নিয়ে নরসিংদী ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন জানান, হাসপাতালে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর জানতে পারি। পরে সেখানে গিয়ে লোকজন জড়ো ও থানা পুলিশের উপস্থিতি দেখতে পাই। পরে ঘটনা শুনে পুলিশের উপস্থিতিতেই সমোঝোতা করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই বিষয়টি নিয়ে কেন মামলা হলো বা আমাকেই কেন আসামি করা হয়েছে তা আমি বুঝতে পারছি না।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক বলেন, নরসিংদী ডায়াবেটিক হাসপাতালের ঘটনায় তৌহিদ উদ্দিন বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এখনও পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। তাদের ধরার প্রক্রিয়া চলমান আছে।