
প্রিন্ট: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৩ এএম
তিস্তার চরাঞ্চলে তরমুজ চাষে সাফল্য, ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন লালমনিরহাটের কৃষকরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
প্রতিকূল বাস্তবতা সঙ্গী করে টিকে থাকা তিস্তার চরাঞ্চলের মানুষের জীবনে এসেছে নতুন আশার আলো। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারি ইউনিয়নের তিস্তা নদীর জেগে ওঠা চরগুলোতে এবার আগাম তরমুজ চাষে নজরকাড়া সাফল্য পেয়েছেন কৃষকরা। ভালো ফলন ও বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রির ফলে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, বদলে যাচ্ছে পিছিয়ে পড়া এলাকার অর্থনৈতিক চিত্র।
সরকারি কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, তারা স্থানীয় কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে আসছে, যাতে তারা চাষাবাদে আরও সফলতা পান এবং জীবনমান উন্নয়ন হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলে মূলত বসবাস করেন ছিন্নমূল ও ভূমিহীন পরিবারগুলো। তাদের জীবিকা নির্ভর করে কৃষিকাজ ও মাছ শিকারের ওপর। শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা নদীতে পানি না থাকায় জেগে ওঠা চরে কৃষকরা লাভজনক চাষাবাদের সুযোগ খুঁজছিলেন।
চরের কৃষক এজার আলী জানান, ধান চাষ সম্ভব না হওয়ায় বিকল্প ফসল খুঁজতে থাকেন তিনি। পরিচিতদের পরামর্শে আগাম তরমুজ চাষে আগ্রহী হন। কৃষি অফিসের সহায়তায় শীতের শেষে ১ একর জমিতে মাত্র ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে তরমুজ চাষ শুরু করেন, যা থেকে পেয়েছেন ৬০ হাজার টাকার ফলন। তার সাফল্য দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হন।
এবার চর এলাকায় মোট ২ একর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে। কৃষক রাকিব মিয়াও জানান, ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এক একর জমিতে চাষ করে ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন, এবং আরও ৫০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রির আশা করছেন।
গরমের শুরুতেই বাজারে উঠতে শুরু করেছে এই তরমুজ। কালীগঞ্জের বিভিন্ন হাট-বাজারে ভ্যানগাড়িতে ফেরি করে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা কৃষকদের জন্য বাড়তি লাভের সুযোগ তৈরি করেছে।
তরমুজ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম জানান, তিনি এ পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। আগাম ফসল হওয়ায় বাজারে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, চরের বেলে-দোঁয়াশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। কৃষকদের আমরা পরামর্শ ও সহায়তা দিয়েছি। জামির বাড়ির চর এলাকায় পাকিজা জাতের আগাম তরমুজ চাষে মিলেছে ভালো ফলন। উদ্যোগ বাড়লে ভবিষ্যতে আরও বেশি জমিতে এই লাভজনক ফসল চাষ সম্ভব বলে মনে করছেন তিনি।
এই সাফল্য চরাঞ্চলের কৃষকদের জীবনে এনেছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।