
প্রিন্ট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম

বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্তে ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দর থেকে চারটি বাংলাদেশি পণ্যবোঝাই ট্রাক ফেরত পাঠানো হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ট্রাকগুলো ফেরত পাঠায়, পরে সেগুলো ঢাকায় ফিরে আসে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৯ জুন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার আওতায় বাংলাদেশ ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভুটান, নেপাল, মিয়ানমারসহ তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি করতে পারত। তবে গত ৮ এপ্রিল ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) হঠাৎ করেই এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, যেসব পণ্য এরই মধ্যে ভারতের সীমান্তে ঢুকেছে, সেগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ভারত ত্যাগ করতে হবে। তবে এ আদেশের আগে এন্ট্রি হওয়া পণ্যের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।
পেট্রাপোল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা আসায় ট্রানজিট পণ্যের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, ভারতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বেনাপোল দিয়ে প্রবেশ করতে যাওয়া চারটি রপ্তানি পণ্যবোঝাই ট্রাক ফেরত পাঠানো হয়েছে। ট্রাকগুলো ঢাকার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেডের ছিল।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, পেট্রাপোল কাস্টমস এখন তৃতীয় দেশে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের জন্য প্রয়োজনীয় কার্পাস ইস্যু করছে না, ফলে পণ্য গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো হচ্ছে।
এ নিয়ে রপ্তানিকারকরা চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার মাধ্যমে কম খরচে ও দ্রুত তৃতীয় দেশে পণ্য পাঠানো সম্ভব হতো। এই সুবিধা বন্ধ হওয়ায় বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়বেন।
এছাড়া, পরিবহন খাতেও বড় ধাক্কা লেগেছে। বেনাপোল বন্দরে পৌঁছানো শত শত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লজিস্টিক কোম্পানিগুলো এই রপ্তানি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিল। এখন তারা কর্মহীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।
এদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরাও এতে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। পেট্রাপোল বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন আসা প্রায় ২০০ গাড়ির মধ্যে ৪০ শতাংশই ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যবাহী ছিল। এই সিদ্ধান্তে বন্দর-নির্ভর ব্যবসা ও কর্মসংস্থানে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ব্যবসায়ীদের মতে, শুধুমাত্র পেট্রাপোল বন্দরে এই সিদ্ধান্তে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।