
প্রিন্ট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৪ এএম
রূপগঞ্জে পোশাকশ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ছবি : যুগেরচিন্তা২৪
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রবিনটেক্স নামে একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই, বোনাস, ইফতার বিল এবং বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল থেকে আন্দোলনে নামা শ্রমিকরা টানা চার ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে দীর্ঘ যানজট ও জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
বিক্ষোভ চলাকালে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ শতাধিক আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল থেকেই রবিনটেক্স গার্মেন্টসের শ্রমিকরা শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার ভেতরে অবস্থান করে আসছিলেন। বুধবার সকালে আগের মতোই বিভিন্ন দাবি নিয়ে তারা কারখানার ভেতরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বললে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পানির বোতল নিক্ষেপ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেয়।
পরে শ্রমিকরা কারখানার বাইরে এসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরাতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ৫০ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
শ্রমিকদের অভিযোগ, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৯ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও ছুটি শুরুর আগের দিন বিনা নোটিশে ৬৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। এছাড়া ৬৫ শতাংশ বোনাসের প্রতিশ্রুতি দিলেও দেওয়া হয় মাত্র ৫০ শতাংশ, এবং এক মাসের বেতন না দিয়ে কেবল ২০ দিনের বেতন পরিশোধ করে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
৮ এপ্রিল কারখানা খোলার পর শ্রমিকরা দাবি জানালে মালিকপক্ষ এড়িয়ে যান। ৯ এপ্রিল সকালে তারা কারখানার ভেতরে অবস্থান শুরু করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরে তারা মহাসড়কে নেমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।
পুলিশ জানায়, শ্রমিকরা প্রথমে বোতল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করতে হয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ে।
জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী হাসান বলেন, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও এখনও শ্রমিকরা বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা অব্যাহত আছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের শান্ত রাখার পাশাপাশি মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।