
প্রিন্ট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৭ এএম
দোকানে ইসরায়েলি পণ্য না রাখতে হুমকি, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম

ছবি- সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও সমাবেশ চলছে। এ বিক্ষোভকে কেন্দ্রে করে গতকাল সোমবার কিছু দুর্বৃত্ত দেশের বিভিন্ন শহরে বাটা, কেএফসিসহ বিভিন্ন দোকান, রেস্তোরাঁয় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এখানেই থেমে নেই, দেশের বিভিন্ন দোকান ও চেইন সুপারশপগুলোতে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা এবং না রাখতে নির্দেশনা দিচ্ছেন কেউ কেউ।
জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বেশ কিছু দোকান ও সুপারশপে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি ও না রাখার জন্য এক ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যদি কোনো দোকান বা সুপারশপ ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করে তবে সেগুলো ভাঙচুরেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। দোকানে দোকানে গিয়ে তারা বেশকিছু পণ্যের ছবিসহ লিফলেট দিচ্ছেন।
দেশের বিভিন্ন শহরে ভাঙচুর ও লুটপাতের ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, তারা দেশের জন্য বিনিয়োগ করে ব্যবসা করছেন। ভাঙচুর বা লুটপাট হলে ব্যবসায়ীদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। এছাড়া ইসরায়েলি পণ্য নয় এমন বিদেশি পণ্যের তালিকা দিয়েও সেগুলো দোকান থেকে সরিয়ে নিতে বলা হচ্ছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর ওয়ারীতে অবস্থিত এক সুপারশপের ম্যানেজার জাগো নিউজকে বলেন, আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) কিছু টিনএজ ছেলে এসে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করতে নিষেধ করে গেছেন। শপে যত ইসরায়েলি পণ্য আছে সবগুলো যেন এই সপ্তাহের মধ্যে সরিয়ে নেই, নয়তো তারা আমাদের আউটলেট চালাইতে দেবেন না বলেও হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেন, শুধু আমাদের সুপারশপে নয়, আশপাশে দোকান এবং আরও তিনটি সুপারশপে হুমকি দিয়েছে। এ অবস্থায় আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর কয়েকটি দোকানে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে। অনেক দোকানি নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পুলিশকে জানাতে চাচ্ছেন না। যে তালিকা দেওয়া হয়েছে সে তালিকা ধরে অনেক দোকানি ও সুপারশপ কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে সেসব পণ্য সরিয়ে ফেলেছেন।
আন্তর্জাতিক জুতা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাটা সম্প্রতি বাংলাদেশে তাদের কয়েকটি আউটলেটে হামলার ঘটনাকে ‘ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্যের ফল’ বলে দাবি করেছে। বাটার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বাটা কোনো ইসরায়েলি মালিকানাধীন কোম্পানি নয় এবং চলমান ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘাতের সঙ্গে তাদের কোনো রাজনৈতিক সংযোগ নেই। বাটা জানায়, বাটা গ্লোবালি একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন পারিবারিক প্রতিষ্ঠান। যার মূল সূচনা হয়েছিল চেক রিপাবলিকে। আমাদের কোনো রাজনৈতিক সংঘাতের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। তবুও আমার বিভাগের সব ওসিদের ডেকেছি। তাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। যাতে করে কেউ বিক্ষোভের নামে ভাঙচুর-লুটপাত কিংবা বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না করতে পারে।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর জাগো নিউজকে বলেন, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় এরই মধ্যে ৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ভিডিও ফুটেজ এবং স্থিরচিত্র পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অপরাধে জড়িত অন্যান্যদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। ভবিষ্যতে যদি এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য কেউ অপপ্রয়াস চালায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।