
প্রিন্ট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৫ পিএম
শামীম বাহিনীর প্রধানকে যুবদলের পদ থেকে বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:২৩ পিএম

যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম মিয়া
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে হাসিব নামে এক যুবক নিহত হন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) নিহতের বড় ভাই মো. বাবু বাদি হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
সংঘর্ষের পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে রমজান মিয়া এবং দুলাল ওরফে টাক দুলালের ছেলে রবিন মিয়া। পুলিশ জানিয়েছে, মামলার অন্যান্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, চনপাড়ায় অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম মিয়ার বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রাব্বানীর বাহিনীর মধ্যে। আধিপত্য বিস্তারের জেরে সংঘর্ষে উভয় পক্ষ গোলাগুলি ও হামলায় লিপ্ত হয়, যা লুটপাট পর্যন্ত গড়ায়।
ঘটনার পর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি থেকে শামীম মিয়াকে বহিষ্কার করেছে। সংগঠনের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শামীম মিয়া দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে সংঘর্ষ সৃষ্টির মাধ্যমে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। এজন্য তার প্রাথমিক সদস্যপদসহ যুবদলের সব সাংগঠনিক সম্পর্ক বাতিল করা হয়েছে। যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বহিষ্কৃত নেতার কোনো কর্মকাণ্ডের দায় সংগঠন নেবে না এবং যুবদলের অন্য নেতাকর্মীদেরও তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের গ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান বলেন, "হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এজাহারভুক্ত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।"
স্থানীয়রা মনে করেন, চনপাড়ায় ক্ষমতা দখলের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলেও যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় সহিংসতা বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের সংঘর্ষ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।