তেঁতুলিয়ায় ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ এএম
পঞ্চগড়ে টানা ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ক্রমাগত নিচে নামায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও যানবাহন চালকরা। ঠান্ডা আর কুয়াশার চাপে থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১ থেকে ১২ কিলোমিটার। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত সড়ক, মাঠ ও ঘাট ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকায় দৃষ্টিসীমা মারাত্মকভাবে কমে যায়। ফলে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
এর আগের দিন মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেদিন বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ এবং দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠে মাত্র ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
টানা কুয়াশা ও শীতের কারণে সকালবেলা কাজে বের হতে পারছেন না অনেকেই। শীত নিবারণে বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির, যা শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
সদর উপজেলার জগদল এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, সকালে কাজে বের হওয়া খুব কষ্টকর। এত ঠান্ডা যে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কাজ না করলে সংসার চলে না, আবার ঠান্ডায় কাজ করাও কঠিন।
ধাক্কামারা এলাকার অটোরিকশা চালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, কুয়াশার কারণে সামনে কিছুই দেখা যায় না। হেডলাইট জ্বালিয়েও অটো চালাতে ভয় লাগে। যাত্রী কম, আয়ও অনেক কমে গেছে।
জালাসী এলাকার গৃহিণী রুবি বেগম বলেন, শিশু আর বয়স্কদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় আছি। সন্ধ্যার পর থেকেই এত ঠান্ডা পড়ে যে ঘরের ভেতরেও থাকা কঠিন হয়ে যায়।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ১১ ডিসেম্বর। সেদিন তাপমাত্রা নেমে আসে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে বিবেচিত।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। মাঝখানে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী দিনগুলোতে আবার কমছে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে তেঁতুলিয়াসহ উত্তরাঞ্চলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।



