Logo
Logo
×

সারাদেশ

সম্পত্তি বিরোধে চারবার পেছাল বাবার জানাজা, দুই দিন লাশবাহী গাড়িতে পড়ে থাকল মরদেহ

Icon

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৩ পিএম

সম্পত্তি বিরোধে চারবার পেছাল বাবার জানাজা, দুই দিন লাশবাহী গাড়িতে পড়ে থাকল মরদেহ

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দুই সংসারের সন্তানের বিরোধে চারবার পেছানো হয়েছে এক বৃদ্ধ বাবার জানাজা। টানা দুই দিন লাশবাহী গাড়িতে পড়ে থাকলেও দাফনের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি পরিবার। এতে এলাকায় চরম মানবিক বেদনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি ঘটেছে হাটহাজারী পৌরসভার সেকান্দর মঞ্জিল এলাকায়।

গত শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মারা যান সেকান্দর মিয়া (৭২)। মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজন ও এলাকাবাসী বারবার জানাজায় অংশ নিতে এলেও প্রতিবারই সময় পরিবর্তনের কারণে হতাশ হয়ে ফিরে যান।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সেকান্দর মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ঘরে দুই ছেলে ও তিন মেয়ে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। প্রায় ৩২ বছর আগে তিনি প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন। এরপর দ্বিতীয় সংসার গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরেই সম্পত্তি বণ্টনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল, যা আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

মৃত্যুর পর দ্বিতীয় সংসারের সন্তানরা দাফন-কাফনের প্রস্তুতি নিয়ে শনিবার সকাল ১১টায় বাড়ির ঈদগাহ মাঠে এবং দুপুর ২টায় নিজ বাড়ি সংলগ্ন মেখল বাদামতল এলাকায় জানাজার সময় নির্ধারণ করেন। পরদিন রোববার একই সময় আবার জানাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এতে বাধা দেন প্রথম স্ত্রীর ঘরের সন্তানরা।

তাদের দাবি, শরিয়ত ও আইন অনুযায়ী তালাকপ্রাপ্ত হলেও তারা বাবার সম্পত্তির বৈধ উত্তরাধিকারী। অভিযোগ রয়েছে, দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তানদের প্রভাবে সেকান্দর মিয়া প্রথম সংসারের সন্তানদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেন। যদিও বঞ্চিত বলে দাবি করা পরিবারটি ঘটনাস্থলের ক্রয়কৃত সম্পত্তির একটি অংশ দখল করে গত তিন বছর ধরে সেমিপাকা ঘরে বসবাস করছে।

এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সম্পত্তি বঞ্চিত পরিবারের সদস্যরা জানান, আইনের তোয়াক্কা না করেই তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাদের আরও অভিযোগ, দ্বিতীয় সংসারের এক সন্তানকে দেওয়া জমি দেখিয়ে অন্য একজন ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করেছেন।

এলাকাবাসী মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে আইন অনুযায়ী স্ট্যাম্পের মাধ্যমে সম্পত্তি বণ্টনের আশ্বাস দিয়ে আগে দাফনের অনুরোধ জানালেও কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি হয়নি। এক পক্ষের দাবি ছিল প্রাপ্য নিশ্চিত না হলে দাফন নয় অন্য পক্ষের বক্তব্য আগে দাফন, পরে আলোচনা।

অবশেষে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের হস্তক্ষেপে সমাধানে আসে উভয় পক্ষ । উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে গতকাল রবিবার মাগরিবের নামাজের পর জানাজা ও দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন