টিকটকে নাচের ভিডিও দেওয়াকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহের জেরে বগুড়ায় মারুফা (২৫) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। হত্যার পর মরদেহ গুম করতে বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে মুখ সিমেন্ট দিয়ে প্লাস্টার করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বগুড়া সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়নের নুড়ুইল মধ্যপাড়া গ্রাম থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মুকুল মিয়াকে (৩১) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার মুকুল মিয়া নুড়ুইল মধ্যপাড়া গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে। নিহত মারুফা বগুড়া সদর উপজেলার লাহেড়ীপাড়া ইউনিয়নের নন্দীপাড়া পীরগাছা এলাকার মাহবুবের মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১৩ ডিসেম্বর শনিবার রাতে মারুফার এক চাচাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে নাচানাচির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মুকুল তাঁর স্ত্রীকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই রাতেই মরদেহটি বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে মুখ সিমেন্ট দিয়ে প্লাস্টার করে দেন।

হত্যার পর বিষয়টি আড়াল করতে মুকুল প্রচার করেন যে তাঁর স্ত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন। এমনকি বিষয়টিকে বিশ্বাসযোগ্য করতে গত ১৫ ডিসেম্বর তিনি নিজেই বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার জানান, জিডির সূত্র ধরে ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে মুকুলের বক্তব্যে অসংগতি ধরা পড়লে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তিনি স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সেপটিক ট্যাংক থেকে মারুফার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি টিকটক ভিডিও নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। মরদেহ গুম করতে পরিকল্পিতভাবে সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।