হান্নান মাসউদকে ‘নিষিদ্ধ’ করার হুঁশিয়ারি
হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৮ এএম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে শাপলা কলি প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদকে ফেসবুকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ‘রুপক নন্দী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া একটি পোস্টে তাকে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
ভাইরাল হওয়া ওই পোস্টে সরাসরি হান্নান মাসউদকে উদ্দেশ করে লেখা হয়, ‘হান্নান, আগুন নিয়ে খেলা করো না। পরে পস্তাতে হবে—বলে দিলাম।’ পোস্টে আরও দাবি করা হয়, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদ (পিচ্চি আজাদ)কে যারা ভালোবাসেন, তারা হান্নান মাসউদকে ছাড় দেবেন না। এমনকি হালিম আজাদকে গ্রেপ্তার করা হলে হান্নান মাসউদকে হাতিয়ায় ‘নিষিদ্ধ’ করার ঘোষণাও দেওয়া হয়।

এদিকে একই সময়ে আব্দুল হালিম আজাদের ছেলে ইসরাত রায়হান অমি এনসিপির এক কর্মীকে মেসেঞ্জারে উসকানিমূলক বার্তা পাঠান বলে অভিযোগ ওঠে। ওই বার্তায় তিনি হুমকি দিয়ে লেখেন, আব্দুল হালিম আজাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে হান্নান মাসউদ ও তানভীরসহ অন্যান্য নেতাদের হাতিয়ার উত্তর অঞ্চলে চলাচল ‘হারাম’ করে দেওয়া হবে। বার্তায় আরও বলা হয়, তাদের নেতা-কর্মীরা ‘ডাইরেক্ট গিলে খেয়ে ফেলবে’।
স্থানীয়রা জানান, হাতিয়ার রাজনীতিতে সম্প্রতি আব্দুল হালিম আজাদ সরকার গঠনে সম্ভাবনাময় একটি দলের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। এ নিয়ে এনসিপি প্রার্থী হান্নান মাসউদের সমর্থকদের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি হয়। এরই মধ্যে আব্দুল হালিম আজাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার গুঞ্জন শুরু হলে তার অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং এর দায় হান্নান মাসউদের ওপর চাপিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিতে শুরু করে।
এই ঘটনায় হাতিয়ার সাধারণ ভোটার ও এনসিপি সমর্থকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার বলেন, নির্বাচনের আগে একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে এভাবে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।
এ বিষয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আমি এসব হুমকিতে মোটেও শঙ্কিত নই। জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার গুলির মুখেও আমরা ভয় পাইনি, সেখানে এসব সন্ত্রাসীদের তোয়াক্কা করি না। প্রশাসন শুরু থেকেই কঠোর হলে তারা এতটা সাহস পেত না। আজ হাদি’র মতো জুলাই অভ্যুত্থানের একজন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়।’
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যারা পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।



