রূপগঞ্জে ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু, বাঁচাতে মায়ের আকুতি
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
চার বছরের শিশু মর্তুজা আলী ভূঁইয়া। যার এই বয়সে পৃথিবীর আলো এবং খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকার কথা। আজ সেই মর্তুজা মৃত্যুর যন্ত্রণায় ছটফট করছে। ক্যান্সারের কারণে ডান চোখ অপারেশন করে চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। শিশু মর্তুজার পিছু ছাড়ছে না মরণব্যাধি ক্যান্সার। বাবা থেকেও নেই। অসহায় মা ধার-দেনা করে একমাত্র সন্তানকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু মর্তুজা বাঁচতে চায়। ওই শিশু অসহায় মায়ের আকুতি আমার সন্তানকে আপনারা বাঁচান। আপনাদের সাহায্যেই পারে আমার সন্তানকে বাঁচাতে। কথাগুলো বলছিলেন শিশু মর্তুজা আলী ভূঁইয়ার মা শিল্পী রানী বেগম।
রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্র এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডে বসবাস করেন শিল্পী রানী বেগম। অসুস্থ সন্তানের সেবা যত্ন করতে গিয়ে পোশাক কারখানার চাকুরিটিও ছেড়ে দিতে হয় শিল্পী রানী বেগমকে। স্বামী নূরে আলম ভূঁইয়া অসুস্থ সন্তানকে রেখে অন্যত্র বিয়ে করে চলে গেছেন। একদিন খোঁজ খবরও নেন না।
মরণব্যাধি ক্যান্সার আক্রান্ত মর্তুজার মা শিল্পী রানী বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, গত পাঁচ বছর আগে বরাবর এলাকার কাসেম মিয়ার ছেলে নুর আলমের সঙ্গে শিল্পি রাণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে মর্তুজা আলী ভূঁইয়ার জন্ম হয়।
গত সাত মাস আগে শিশু মর্তুজা আলী ভূঁইয়ার ডান চোখে একটি টিউমার ধরা পড়ে। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে মর্তুজার চোখের অপারেশন করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই ডান চোখ উপড়ে ফেলে দেয়। পরে ওই চোখেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মরণ ব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে।
শিল্পী রানী একটি সুয়েটার কারখানায় চাকরি করতেন। সন্তানের সেবা-যত্ন নেওয়ার জন্য ওই চাকুরিটিও ছেড়ে দেন। ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আড়াই লাখ টাকা ধার দেনা করেন। এখন চিকিৎসা করাতে না পেরে তিনি মানুষের ধারে ধারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন ৭ থেকে ৮ বার কেমোথেরাপি নিতে হবে। প্রতিবার ২৫ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা খরচ হবে। এখন সন্তানকে বাঁচাতে শিল্পী রানী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি সরকারি ভাবে ও বিত্তশালীদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, অন্যান্য শিশুরা স্বাভাবিক ভাবে খেলাধুলা করলেও মর্তুজা সেভাবে খেলাধুলা করতে পারে না। মর্তুজার মা শিল্পী রানী কোন আয় না থাকায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হয়। ধার দেনা করে চিকিৎসা চালাতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শিল্পী রানী। এখন একমাত্র শিশু সন্তানকে বাঁচাতে আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন। মুর্তজার পাশে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ কে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।
সট- ২, মোঃ সাইফুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মর্তুজাকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। সরকারিভাবেও আরও সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব।



