নরসিংদীতে স্পিনিং মিলে তুলার গুদামে অগ্নিকাণ্ড
নরসিংদী প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২৪ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
নরসিংদীর সদর উপজেলার শীলমান্দিতে এন আর স্পিনিং মিলের তুলা ও সুতার গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১০টা ৫ মিনিটে আগুন লাগার পর ভোর ৬টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট কাজ করে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আনলেও দুপুর ১টায় পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে ফায়ার সার্ভিস।
কারখানা ও ফায়ার সার্ভিসের সূত্র জানায়, শনিবার রাত দশটার দিকে কারখানার একটি তুলার গোডাউনে আগুনের লেলিহাল শিখা দেখতে পায় শ্রমিকরা। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোডাউনের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। তুলা ও সুতা থাকায় আগুন দ্রুত ভয়াবহ রূপ নেয়। এ অবস্থায় কারখানার নিজস্ব ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পাশাপাশি স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলে প্রথমে নরসিংদী, মাধবদী ও পলাশের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে নারায়ণগঞ্জের একটি টিমসহ আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ করে। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, দমকলকর্মীদের পাশাপাশি মিলের শ্রমিক ও স্থানীয়রাও পানি ঢেলে আগুন ঠেকানোর চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট কাজ করে ভোর পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সকাল থেকে পাঁচটি ইউনিট তুলার গোডাউনের ডাম্পিং আগুন নির্বাপণের জন্য কাজ করে। দুপুর ১টায় পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে ফায়ার সার্ভিস।
সরেজমিনে সকালে মিলটিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই মিলের সুতার গোডাউন। রাতের আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ডাম্পিং এর কাজ করছেন। মাঝে মাঝে সুতার ও তুলার বস্তা থেকে আগুন ও ধোঁয়া বের হচ্ছে, সাথে সাথেই তা পানি দিয়ে নিভাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। একই অবস্থা দুই ও তিন নম্বরের গোডাউনের। পাশের গোডাউনগুলো থেকে শ্রমিকরা মালামাল সরিয়ে নিয়ে ক্ষতি কিছুটা কমানোর চেষ্ঠা করছে। এই আগুনে শ্রমিকদের একটি আবাসস্থল ও মিলের গাড়ি পুড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
কারখানার শ্রমিক আকাশ বলেন, রাতে আমরা কোয়ার্টারে ছিলাম। আগুন লাগার খবর পেয়ে এসে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আমরা অনেক চেষ্ঠা করেছি কিন্তু আগুন নেভাতে পারিনি। আগুনের তীব্রতা বেশি ছিলো। আগুনে পুড়ে মিলের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
এন আর স্পিনিং মিলের ডিজিএম (অ্যাকাউন্টস) ফারুকুজ্জামান জানান, গুদামের ঠিক পাশে থাকা একটি বিদ্যুতের তার গাছে ঘষা খেয়ে স্পার্ক হয়। সেই স্ফুলিঙ্গ তুলার ওপর পড়তেই কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে আগুন গুদামের ভেতর ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি বলেন,আগুন এত দ্রুত ছড়াবে কেউ ভাবতেই পারেনি। আমরা সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের বের করে দিই। কিন্তু চোখের সামনে কয়েক কোটি টাকার তুলা আর সুতা পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে, কিছুই করার নেই।
ঢাকা বিভাগের ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক কাজী নাজমুজ্জামান জানান, রাত দশটার দিকে খবর পেয়ে একে একে আমাদের আটটি ইউনিট কাজ করে ভোর পাঁচটার দিকে আগুন আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। পরে দুপুর ১ টায় আগুন সর্ম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। কারখানায় থাকা দুইটি গোডাউনে সুতা এবং একটি গোডাউনে তুলায় আগুন লাগার কারণে বাতাসের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পরে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক সটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। এখনো কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ও আগুন লাগার সঠিক কারণ তদন্তের পরে বলা যাবে।



