নরসিংদীতে ভূমিকম্পে নিহত ২, আহত অর্ধশতাধিক
নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:০৫ পিএম
নরসিংদীতে তীব্র ভূমিকম্পে অর্ধশতাধিক নারী পুরুষ আহত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০ টা ৩৮ মিনিটে সারাদেশের ন্যায় নরসিংদীতে ভূমিকম্প অনুভব হয়। এসময় পুরো জেলা কেপে উঠে। বিশেষ করে পলাশ উপজের ঘোড়াশাল ও নরসিংদী শহর। এসময় মানুষ আতঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছোটাছুটি করতে থাকে।
নরসিংদী শহরের গাবতলী এলাকায় ছয়তলা নির্মাধীন ভবনের দেয়াল ধসে একতলা ভবনের উপর পড়লে বাড়ির ভাড়াটিয়া দেলোয়ার, ছেলে ওমর ও মেয়ে তাসফিয়া আহত হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাবা ছেলেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ওমরকে (১০) মৃত ঘোষণা করে।
এছাড়াও পলাশের মালিতা এলাকায় মাটির ঘরের দেয়াল ধসে কাজম আলী (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়।
এদিকে ঘড়াশাল এলাকায় ৬টি বাড়ি ও এস এ প্লাজা নামে একটি ৭তলা বিশিষ্ট শপিংমলে ফাটল ধরে। এছাড়া ঘোড়াশাল বাজার এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদ থেকে দেয়ালের ইট পরে ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়।
ঘোড়াশাল বাজারের জুতার দোকানী আলম মিয়া বলেন, আমার দোকানে জুতাসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল ছিলো। ভূমিকম্প শুরু হলে সব কিছু দোকানের পড়ে গিয়ে আসবাবপত্রের ভেঙ্গে গেছে।
বাজারের মুদি দোকানদার আসলাম মিয়া বলেন, আমার মুদি দোকানের কাচের মালামাল গুলো পড়ে ভেঙে গেছে। আমি প্রথমে ভূমিকম্প বুঝতে পারি নি। মনে হয়েছে কেউ হামলা করেছে। পরক্ষণেই বুঝতে পেরেছি, এটি হামলা নয়, এটি ভূমিকম্প।
ঘোড়াশাল ঈদগাহ রোডের মারকাসুল সুন্নাহ তাহফিজুল কুরআন সুন্নাহ মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি সালা উদ্দিন আনসারী বলেন, আমাদের ৬ তলা ভবনের ৪-৫ জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়েছে, আতঙ্কিত ছিলো।
ভবনের মালিক আমানউল্লাহ বলেন, ভুমিকম্পে আমার ভবনে কয়েক জায়গায় ফাটল হয়েছে।ভবনের সব দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে।কেউ ভয়ে দোকান খুলছে না।
এদিকে ভুমিকম্পে ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনের একটি ট্রান্সফরমায় আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।অপর ট্রান্সফরমার গুলোর অধিকাংশ সংযোগ ভেঙ্গে পড়ে।পলাশ ফায়ার এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
পলাশ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুস সহিদ জানান, আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী এনামুল হককে বার বার কল দেওয়ার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অপরদিকে ঘোড়াশালসহ পলাশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করার চেস্টা করছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল হিসেবে নরসিংদী পলাশ উপজেলা ঘোড়াশাল এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গুলশানা কবির বলেন, ভূমিকম্পে আহত হয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক নারী পুরুষ চিকিৎসা নিয়েছে। এখন ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আহতরা আসছে।



