Logo
Logo
×

সারাদেশ

হিমাগারের খরচের অর্ধেকই উঠছে না আলু চাষিদের

Icon

অনলাইন ডেস্ক :

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০৪ পিএম

হিমাগারের খরচের অর্ধেকই উঠছে না আলু চাষিদের

ছবি : সংগৃহীত

উত্তরের জেলা নীলফামারীতে হিমাগারে রাখা আলুর বাজারে ধস নেমেছে। উৎপাদন খরচ, পরিবহন ব্যয় ও হিমাগার ভাড়া বহন করে বর্তমানে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। উৎপাদন ব্যয়ের চাপ সামাল দিতে না পেরে অনেকে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

মৌসুমের শুরুতে ন্যায্যমূল্য পাওয়ার আশায় হিমাগারে আলু মজুত করেছেন কৃষকেরা। কিন্তু বাজারে আলুর চাহিদা কম থাকায় দাম ক্রমেই পড়ে যাচ্ছে। যে দামে আলু বিক্রি হচ্ছে, তাতে খরচই উঠছে না বরং উল্টো বাড়ছে ক্ষতির পরিমাণ। গত বছরের তুলনায় এবার অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে মজুত করা আলু। জেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর লাভের স্বপ্ন নিয়ে হিমাগারে ব্যাপক পরিমাণ আলু মজুত করেন। তবে এবার দাম না থাকায় স্বপ্ন ভঙ্গ হচ্ছে কৃষকের।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় ১১টি হিমাগারে প্রায় ৯০ হাজার টন আলু মজুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ হাজার টন আলু বের করা হয়। বাজারে দাম কম থাকার কারণে বাকি আলু হিমাগারে পড়ে আছে।

কৃষকরা বলছেন, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার যেন জরুরি ভিত্তিতে বাজার মনিটরিং বাড়ায় এবং হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর জন্য প্রণোদনা বা সহায়তা প্রদান করে। হিমাগার ভাড়া, পরিবহন খরচ ও শ্রমিক মজুরি যোগ করলে কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা ব্যয় হয়। সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি দামে। ফলে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৩ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

জলঢাকা উপজেলা কৃষক মমিনুর রহমান বলেন, গতবছরের তুলনায় এবার আলুর বাজারের অবস্থা খুব খারাপ। আমরা প্রতি বছর হিমাগারে আলু মজুত করি তবে এবার আলুর দাম নেই। খরচ সবমিলিয়ে কেজি প্রতি ১০ টাকা লোকসান হয়েছে।

আরেক কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, সরকার নির্ধারণ করা মূল্যে বিক্রি না হয়ে বাজারে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমাদের মজুত করা আলু বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে অপরদিকে ক্রয় করার তেমন ব্যবসায়ীও নেই।

কৃষক আরিফ মিয়া বলেন, লাভের আশা করে হিমাগারে আলু রেখেছিলাম কিন্তু এবার লোকসান হয়ে গেল। অনেক টাকা খরচ করে আলু আবাদ করেছিলাম যে ব্যয় হয়েছে সেটাও উঠছে না।

কৃষক জাহিদ ইসলাম বলেন, ঋণ করে আলু রোপণ করেছিলাম। পরে হিমাগারে মজুত রাখি ভালো দাম পাওয়ার আশায়। তবে এবার আলুতে ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। সরকারের উচিত আলু রপ্তানিতে উদ্যোগ নেওয়া এতে আলুর বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। এতে কৃষকদের ক্ষতি অনেকটা লাঘব হবে।

ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান লুতু বলেন, আমি ব্যাবসায়িকভাবে কয়েক হাজার বস্তা আলু হিমাগারে মজুত করেছি। পরিবহন শ্রমিকসহ কেজি প্রতি প্রায় ১০ টাকা লোকসান হবে। আমার কয়েক হাজার বস্তা আলু হিমাগারে মজুত করা আছে লোকসানের কারণে এখনো বের করিনি।

জেলার মুক্তা হিমাগারের ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর আমাদের হিমাগারে কৃষকেরা আলু মজুত করে রাখেন। গত বছর আলুর দাম ভালো থাকার কারণে সময়ের আগে আলু বের করেছে অনেক কৃষক, তবে এবার দাম না থাকায় হিমাগারে পড়ে আছে আলু। এতে আমাদের লোকসানের পাশাপাশি কৃষক ও ব্যবসায়ীদের লোকসান হচ্ছে।

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মনজুর ইসলাম বলেন, এ বছর জেলায় ইতোমধ্যে প্রায় ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আলুর বীজ রোপণ শেষ হয়েছে, এর মধ্যে আগাম আলু রয়েছেঅল্পকিছু দিনের মধ্যেই নতুন আলু বাজারে আসবেযদি দাম ভালো থাকে, কৃষকেরা কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। এ বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার হেক্টর জমি।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন