সিএমপি কমিশনারের নির্দেশ
অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র এসএমজি দিয়ে ব্রাশফায়ার, নিরস্ত্রদের ওপর নয়
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২১ এএম
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ড ও অস্ত্রবাজি দমনে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। তিনি মঙ্গলবার পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছেন— যে কোনো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে দেখামাত্র সাবমেশিন গান (এসএমজি) দিয়ে ব্রাশফায়ার করতে হবে। তবে এই নির্দেশনা নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
সিএমপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে কমিশনার ওয়্যারলেসের মাধ্যমে টহল ও থানা পুলিশকে একাধিকবার নির্দেশ দেন— শটগান নয়, চায়না রাইফেলও নয়, এখন এসএমজি ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে।
এ সময় তিনি টহল ও অভিযানে শিশা শটগান, দুইটি গ্যাস গান এবং নাইন এমএম পিস্তল বহনের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি স্থায়ী চেকপোস্টের সংখ্যা সাতটি থেকে বাড়িয়ে ১৩টি করার নির্দেশ দেন কমিশনার।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ৫ নভেম্বর নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার খন্দকারপাড়া এলাকায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত হন। একই ঘটনায় এরশাদ উল্লাহ আহত হন। পরদিন একই এলাকায় গুলিতে এক প্রতিবন্ধী রিকশাচালক আহত হন। এই ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতেই সিএমপি কমিশনার নতুন করে কঠোর নির্দেশনা দেন।
এ বিষয়ে কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, দেখামাত্র ব্রাশফায়ার হবে শুধুমাত্র অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের জন্য। নিরস্ত্র জনসাধারণের ওপর এটি প্রয়োগ করা হবে না। এমনকি আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল বা রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য নয়—তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য সন্ত্রাসীদের নগরে প্রবেশের সাহস কমানো। সম্প্রতি প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। যেন এই ধরনের সন্ত্রাসীরা আর সাহস না পায়, তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আত্মরক্ষার অধিকার দণ্ডবিধির ৯৬ থেকে ১০৬ ধারায় পুলিশের সব সদস্যেরই রয়েছে। প্রয়োজনে এর দায় আমি নিজেই নেব।
এর আগে ১১ আগস্ট সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এক এসআই গুরুতর আহত হওয়ার পর কমিশনার নির্দেশ দিয়েছিলেন— কোনো টহল বা মোবাইল পার্টি যেন অস্ত্র ও লাইভ গোলাবারুদ ছাড়া মাঠে না নামে।
সর্বশেষ নির্দেশনায় তিনি বলেছেন, শুধুমাত্র রবার বুলেট দিয়ে কাজ হচ্ছে না। পুলিশের কোনো টহল পার্টির সামনে কেউ অস্ত্র বের করলে—সেটা ধারালো অস্ত্র হোক বা আগ্নেয়াস্ত্র—অস্ত্র বের করার সঙ্গে সঙ্গেই গুলি চালাতে হবে। সরকারি গুলির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
নতুন এই নির্দেশনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। চেকপোস্ট ও টহল বাড়ানো, মোবাইল পার্টির অস্ত্র ও গোলাবারুদ যাচাই, এবং সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা আরও জোরদার করার পদক্ষেপ নিয়েছে সিএমপি।



