পলিশেড হাউজে বিকাশের স্বপ্ন, গ্রামীণ কৃষিতে নতুন অধ্যায়
সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
ছবি : যুগেরচিন্তা
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পানিশাইল গ্রামের তরুণ কৃষক বিকাশ চন্দ্র সরকার এখন এলাকার অনুপ্রেরণার প্রতীক। আধুনিক প্রযুক্তি আর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তিনি বদলে দিয়েছেন নিজের জীবন আর গ্রামের কৃষির চিত্র।
২০১৬ সালে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে যুক্ত হন বিকাশ। একের পর এক ফসলের ক্ষতি, বাজারে ন্যায্যমূল্য না পাওয়া এবং কীটনাশকের ঝুঁকিতে বারবার লোকসানের মুখে পড়লেও হাল ছাড়েননি। করোনাকালে ইউটিউব দেখে জানতে পারেন পলিশেড হাউজে প্লাস্টিক ট্রেতে সবজির চারা উৎপাদনের কৌশল। পরীক্ষামূলকভাবে বাড়ির পাশে ছোট একটি শেডে ১০ হাজার চারা উৎপাদন করে প্রথমবারেই সফল হন তিনি।

বর্তমানে বিকাশের এক বিঘা জমিতে রয়েছে তিনটি আধুনিক পলিশেড হাউজ। সেখানে সারিবদ্ধভাবে সাজানো ট্রেতে সবুজ চারার সারি যেন এক জীবন্ত শিল্পকর্ম। বিকাশ বলেন,“করোনার সময় ইউটিউবে দেখেই শুরু করেছিলাম। ভাবিনি এত দূর যেতে পারব। এখন এক মৌসুমে সব খরচ বাদে প্রায় ছয় লাখ টাকা লাভ হয়।”
তার খামারে এখন ৮–১০ জন স্থানীয় নারী-পুরুষ কাজ করেন। কেউ চারা বপনে, কেউ পানি দিতে, কেউ বাজারজাত করতে ব্যস্ত। আগে যারা কৃষির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, তারাও এখন নিয়মিত আয় করছেন।
বিকাশের বাবা রঞ্জিত চন্দ্র সরকার জানান, প্রথমে ভাবতাম ছেলের এই কাজে লাভ হবে না। এখন দেখি সে শুধু নিজের নয়, গ্রামেরও মুখ উজ্জ্বল করছে।’
স্থানীয় কৃষক শহীদ হোসেন বলেন, ‘আগে অন্য জায়গা থেকে চারা আনতাম, অনেক সময় দুর্বল হয়ে যেত। বিকাশের চারা শক্ত, ফলনও ভালো হয়।’
সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল বাশার চৌধুরী জানান, ‘পলিশেড হাউজে চারা উৎপাদনে খরচ ও ঝুঁকি কম, উৎপাদন হয় মানসম্মত। বিকাশের উদ্যোগে সিংগাইরে চারা উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। বিকাশ চন্দ্র সরকারের এই সাফল্য এখন শুধু তার পরিবারের নয়, পুরো গ্রামের অর্থনীতিতে এনেছে ইতিবাচক প্রভাব। তার হাতে গড়া পলিশেড হাউজ আজ তরুণদের চোখে নতুন সম্ভাবনার আলো।’



