Logo
Logo
×

সারাদেশ

অন্ধ হয়েও জীবন থামেনি ফাহিম ফেরদৌসের

Icon

রাজু মোস্তাফিজ,কুড়িগ্রাম

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৪৪ পিএম

অন্ধ হয়েও জীবন থামেনি ফাহিম ফেরদৌসের

অন্ধ হয়েও জীবন থামেনি যুবক ফাহিম ফেরদৌসের

অন্ধ হয়েও জীবন থামেনি যুবক দৃষ্টিজয়ী ফাহিম ফেরদৌসের। মাত্র সাত বছর বয়সে এক জ্বরের পর তার দু চোখ অন্ধ হয়ে যায়। দিন মজুর বাবা বহু চিকিৎসা করেও ভালো করতে পারেনি তার চোখ। পড়াশুনা না করলেও ধীরে ধীরে সংসারে সব কাজ আয়ত্ব করেছে ফামিম।

দৃষ্টিজয়ী ফাহিম সংসারের কারও বোঝা হতে চায়নি। গরীব বাবা ফজলার রহমানের কাছে গরু পালন করা শিখেছে। বর্তমানে তার গরু ফার্মে প্রায় ছয়টি গরু আছে। তা দিয়ে চলে তার সংসার। গরু পালন করে নিজের আত্মকর্মসংস্থানের পথ বেঁচে নিয়েছে সে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের কালে মৌজা গ্রামের দিনমজুর ফাহিম ফেরদৌস।অভাবের সংসার তাদের। তিনভাই বোন মিলে কষ্টে দিন কাটে তার। বাকি ভাই বোন লেখাপড়া শিখলেও অন্ধ ফাহিমের জীবন চলে অন্ধকার জীবনে। কিন্তু থেমে থাকার ছেলে ফাহিম নয়। অসম্ভভ মানুষিক শক্তি তার। সংসারের কারও করুণার পাত্র হতে চায়নি সে। খুব ছোট বেলা থেকেই পরিবারের সকলের কাছে সংসারের সব কাজ আয়ত্ব করে সে। এক সময় বাবার সহয়তায় গরু পালন শুরু করে। খুব ভোরে ঘুম থকে উঠেই গরুকে খাবার দেয়া ঘর পরিষ্কার করা,খড় কাটা,গরুকে গোছল করানোসহ সব কাজ একাই করে।

এভাবে তার খামারে দুটো গরু থেকে এখন ছয়টি গরু হয়েছে। প্রতিবছর এক অথবা দুটি গরু মোটাতাজা করে বিক্রি করে।এতে যে আয় হয় তা দিয়েই তার সংসার চলে যায়। বর্তমানে গরুগুলোর দাম প্রায় তিন লাখ টাকা। আলোহীন চোখে বেকার না থেকে ফাহিমের সারদিন কাটে খামারের কাজে।এখন তার বয়স ২২ বছর। সে গরু দেখার পাশাপাশি মায়ের কাজেও সহযোগিতা করে। দৃষ্টিশক্তি না থাকলেও সমাজের আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মতো চলাফেরা করে। ফাহিম এখন তিন ভাই-বোনের মধ্যে সংসারে একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি।

ফাহিমের চাচা জানান,আমার ভাতিজা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ৬বছর বয়সে সে অন্ধ হয়ে যায়। সে নিরুপায় হয়ে একটি গরুর খামার দিয়েছে। গরুর খামারটি ভালই চলছিল। তার বাবা হার্ট এ্যটাক হয়ে হাসপাতালে আছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না। গরুর খামারেও সংকট দেখা দিয়েচে। সরকারের কাছে আবেদন আমার ভাতিজার প্রতি যেন একটু দৃষ্টি দেয়।

মা ফাহমিদা বেগম জানান সংসারের যে কর্মক্ষম ব্যক্তি অসুস্থ। তার চিকিৎসায় অনেক টাকা লাগে। কয়েকদিন আগে খামারের ৪টি গরু মারা গেছে। গরু দিয়ে আমার অন্ধ ছেলে সংসার চালিয়েছিল। গরুর খাদ্য নেই আমি কি করবো কোন পথ খুঁজে পাচ্ছি না। ওর আব্বার চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।

বোন আলেয়া বেগম জানান আমার ছোট ভাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তার একটি গরুর খামার আছে। আমার বাবা অসুস্থ হয়ে সংসারের সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেছে।

ফাহিম ফেরদৌস জানান আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আমার ছোট একটা গরুর খামার আছে। কিছুদিন আগে ৪টি গরু মারা গেছে। এখন আমার অবস্থা খুব খারাপ চলছে। আমার বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সে গরুর খাবারের ব্যবস্থা করতো। আমার জীবনের ভার কার উপর দিবো। সরকার যেন আমার প্রতি একটু দৃষ্টি দেয় এ আমার অনুরোধ।

জেলা প্রাণী সম্পদ র্কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান জানান,ফাহিম বেলগাছা ইউনিয়নের অধিবাসী। আমারা জেনেছি তার খামারের ২/৩টি গরু এক সাথে মারা গেছে। আমি বিভিন্ন সময় ঐ খামার পরির্দশন করেছি। তাকে আমরা বিভিন্ন সময় টেকনিক্যাল সাপর্ট দিয়ে আসছি। কিছুদিন আগে তাকে খরকাটার মেশিন ও জেলা পরিষদ থেকে ১০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছি। ভবিষ্যৎ এ তাকে বিভিন্ন সহায়তা দেয়া হবে। 

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন