পুলিশ হয়ে গেছে এখন বানরের মতো, খাঁচায় বন্দি করে নাচাচ্ছে আমাদের
কিশোরগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
ছবি : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান বলেছেন, পুলিশ হয়ে গেছে এখন বানরের মতো। রিকশাওয়ালার মার খায় পুলিশ। বানরের খাঁচায় বন্দি করে নাচাচ্ছে আমাদের। আমি অন্য চাকরির চিন্তা করছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে এসব কথা বলেন তিনি। এ ঘটনার একটি ভিডিও সাংবাদিকদের হাতে এসেছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) কটিয়াদী মডেল থানায় পিকনিকের আয়োজনের পর পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খানসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে জেলার কয়েকজন সাংবাদিক ওই রাতে কটিয়াদী থানায় গিয়ে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। এসময় কথাগুলো বলেন তিনি। সাংবাদিকরা তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে হাবিবুল্লাহ খান ক্ষেপে গিয়ে বলেন, ‘আমি অসুস্থ ছিলাম কখন? যিনি রিপোর্ট করেছেন, তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। থানায় যদি পিকনিক হয়, সেটা কি নিউজ করার বিষয়?’
সাংবাদিকরা যুক্তি দেন, থানার কয়েকজন সদস্য অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাই বিষয়টি সংবাদযোগ্য। জবাবে হাবিবুল্লাহ খান বলেন, ‘ধরে নিন আমরা থানায় পিকনিক করেছি। এতে কারও কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছি? নিজের টাকায় খাওয়ার অধিকার তো আছে!’
এরপর সাংবাদিকরা বিদায় নিতে উদ্যত হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পুলিশ হয়ে গেছে এখন বানরের মতো। রিকশাওয়ালার মার খায় পুলিশ। বানরের খাঁচায় বন্দি করে নাচাচ্ছে আমাদের। আমি অন্য চাকরির চিন্তা করছি। সাংবাদিকরা তখন এমন মন্তব্যে আপত্তি জানালে তিনি আরও বলেন, ‘বানর হয়ে গেছি তো এখন, তাই বললাম।’
পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিবুল্লাহ খান সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন কোনো মন্তব্য করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর সঙ্গে তিনি বলেন, ‘এভাবে কথা বলা সমীচীন নয়। বিপক্ষে নিউজ হলেই কোনো পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষুব্ধ হতে পারেন না, তিনি সংশোধন হতে পারেন। বিষয়টি আমি দেখবো। তবে চাকরি করবেন কি করবেন না, সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে কটিয়াদী মডেল থানায় পিকনিকের আয়োজন করা হয়। পরে খাবার খেয়ে পরিদর্শকসহ (তদন্ত) অন্তত ১০ জন পুলিশ সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ছয়জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নেন। অসুস্থদের মধ্যে ছিলেন হাবিবুল্লাহ খান, উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাছেদ মিয়া, কনস্টেবল উজ্জ্বল মিয়া, কাওসার মিয়া, সাদ্দাম হোসেন, সোহাগ মিয়া, সাথী আক্তার ও মো. ওয়াসিমসহ আরও কয়েকজন।



