ধর্ষণকাণ্ডে উত্তপ্ত খাগড়াছড়ি, ১৪৪ ধারা জারি
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩৫ এএম
পাহাড়ি শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার জেরে কয়েকদিনের অবরোধ, মিছিল ও সহিংসতার পর খাগড়াছড়িতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে সদর উপজেলা পরিষদ এলাকা, মহাজন পাড়া, নারিকেল বাগান, চেঙ্গী স্কোয়ার ও শহীদ কাদের সড়কে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছোড়ে। এ সময় স্বনির্ভর ও নারিকেল বাগান এলাকায় কয়েকটি দোকানে হামলার ঘটনাও ঘটে।
পরিস্থিতি অবনতির পর খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বর্তমানে তা বলবৎ রয়েছে। ৭ প্লাটুন বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও এপিবিএন মোতায়েন রয়েছে বিভিন্ন স্থানে।
সহিংসতায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়েছে। রাতে বৌদ্ধবিহারে নাশকতার প্রস্তুতিকালে তিন পাহাড়ি যুবককে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঘটনার কারণে সাজেক ভ্রমণে যাওয়া প্রায় দুই হাজার পর্যটক আটকা পড়েন। পরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তারা খাগড়াছড়ি হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যান।
জানা গেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় শয়ন শীল (১৯) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে শনিবার সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ডাকা হয়। অবরোধ চলাকালে বিভিন্নস্থানে গাছ ফেলে ও টায়ারে আগুন দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়। আলুটিলায় একটি অ্যাম্বুলেন্স ও নারানখাইয়া এলাকায় একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়।
রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন করে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেওয়া হলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। কিছুক্ষণ পর আবারও অবরোধ পালনের ঘোষণা আসে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি উন্নত না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।



