Logo
Logo
×

সারাদেশ

চট্টগ্রাম বন্দরে মাশুল বাড়ায় পণ্যের দামে চাপের আশঙ্কা

Icon

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ এএম

চট্টগ্রাম বন্দরে মাশুল বাড়ায় পণ্যের দামে চাপের আশঙ্কা

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দরের ৫৬ ধরনের সেবায় গড়ে ৪১ শতাংশ মাশুল বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাল্কপণ্য আমদানির খরচেও। বিশেষ করে গম, ভোজ্যতেল, চিনি ও আমদানি করা ফলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য বাল্ক জাহাজে আসে। ফলে নতুন মাশুল ভোক্তাপর্যায়ে দাম বাড়াবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

আমদানিকারকরা বলছেন, বন্দরের বাড়তি মাশুলে আমদানিনির্ভর সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়তে বাধ্য। খাতুনগঞ্জের বড় গম ব্যবসায়ী সুমন বাবু বলেন, “আমাদের দেশে বেকারিসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে গম লাগে। এর প্রায় সবই আমদানি করতে হয়। নতুন মাশুলে গমের খরচ বাড়বে, আর তার প্রভাব সরাসরি ভোক্তাদের ওপর পড়বে।”

তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, খরচ বৃদ্ধির পরিমাণ খুবই সামান্য। সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, “আগে প্রতি কেজি বাল্কপণ্যে পরিবহন খরচ পড়ত ৩২ পয়সা। এখন হবে ৪৪ পয়সা। অর্থাৎ মাত্র ১২ পয়সা বেড়েছে। এটি ভোক্তাপর্যায়ে প্রভাব ফেলবে না।”

নতুন মাশুলে যেসব পরিবর্তন

  • পণ্যভর্তি প্রতি কনটেইনারে গড়ে দিতে হবে ১৬,২৪৩ টাকা (আগে ছিল ১১,৮৪৯ টাকা)।
  • কনটেইনার ওঠানো-নামানোর চার্জ ৪৩.৪০ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৮ ডলার।
  • জাহাজের পাইলটিং চার্জ ৩৫৭ ডলার থেকে বেড়ে ৮০০ ডলার।
  • গ্যান্ট্রি ক্রেন চার্জ প্রতি কনটেইনারে ১৫ ডলার থেকে বেড়ে ২০.৮০ ডলার।
  • কনভেনশনাল কার্গোর বিভিন্ন খাতে টনপ্রতি মাশুলও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল কবীর সুজন বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ ১০-১৫% বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু বাস্তবে গড়ে ৪১% বেড়েছে। এর ফলে আমদানির খরচ বাড়বে এবং শেষ পর্যন্ত ভোক্তার কাছ থেকে আদায় হবে।”

নাবিল গ্রুপের এমডি আমিনুল ইসলাম স্বপন মনে করেন, “সব সেবায় একসঙ্গে মাশুল বাড়ানোয় কনটেইনার ও বাল্কপণ্যের আমদানিখরচ সরাসরি ভোক্তার ওপর চাপাবে।”

সিকম গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিরুল হক বলেন, “মাশুল বাড়ানোর কারণে শুধু আমদানি খাত নয়, রপ্তানিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলে বৈশ্বিক বাজারে আমরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব।”

এদিকে আমদানি করা ফল, রসুন, আদা, মাছ-মাংস আসে রেফার কনটেইনারে। সেখানেও নতুন মাশুলে খরচ বেড়েছে। বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল আলম বলেন, “এমনিতেই আন্তর্জাতিক বাজারে ফলের দাম বেশি। বন্দরের নতুন চার্জে তা আরও বাড়বে।”

বন্দর কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী মাশুল বৃদ্ধির প্রভাব ভোক্তাপর্যায়ে তেমন পড়বে না। কিন্তু ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, কাঁচামাল ও পরিবহন ব্যয় বাড়ায় ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়া অনিবার্য। ফলে আমদানিনির্ভর পণ্যের ওপর চাপ পড়বে সাধারণ ভোক্তারই কাঁধে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন