তিন মাস ধরে পানিবন্দি ডুমুরিয়ার ৪০ গ্রাম
খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় তিন মাস ধরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ৪০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। টানা ভারী বর্ষণে বিল ডাকাতিয়ার হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি থেকে শুরু করে মাছের ঘেরও পানির নিচে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় মতবিনিময় সভা হয়েছে। গত শনিবার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান শলুয়া স্লুইসগেটসহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
স্থানীয়রা জানান, বিল ডাকাতিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হরি নদী, হামকুড়া নদী ও ভদ্রা নদী দীর্ঘদিন ধরে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষার পানি বের হতে না পেরে বছরজুড়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে ডুমুরিয়ার রংপুর, রঘুনাথপুর, ধামালিয়া, মাগুরাঘোনা, খর্ণিয়া, আটলিয়া, গুটুদিয়াসহ ৪০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন।
ডুমুরিয়া উত্তরাঞ্চল বিল রক্ষা সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক জি এম আমানুল্লাহ জানান, শৈলমারী রেগুলেটরের আওতায় থাকা ছোট-বড় ২৪টি বিলের প্রায় সবই এবার ডুবে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে ধান চাষ বন্ধ হয়ে গেছে এবং গত বছরের ক্ষতির পর মাছ চাষও স্থবির হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে তিন ধাপে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে—তাৎক্ষণিক, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি। এর মধ্যে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। পাউবো জানিয়েছে, ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শৈলমারী গেট থেকে সালতা মোহনা পর্যন্ত পলি অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া প্রায় ৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার আওতায় শৈলমারী নদীর সাড়ে ১৫ কিলোমিটার ড্রেজিং, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি পাম্প স্থাপন এবং ২৪টি খাল পুনর্খনন করা হবে। তবে পরিবেশগত ছাড়পত্র ও সমীক্ষা সম্পন্ন হতে আরও দুই মাস সময় লাগবে।
পাউবোর খুলনা বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, ভেকু মেশিন দিয়ে শৈলমারী গেট থেকে আপার সালতা পর্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে খননকাজ চলছে, যাতে দ্রুত পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়।



