৪০ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরে ট্যারিফ বাড়লো
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন সেবা খাতে প্রায় ৪০ বছর পর ট্যারিফ (মাশুল) বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে জারি হওয়া এ প্রজ্ঞাপন সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গড়ে ৩৫ থেকে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত ট্যারিফ বৃদ্ধির ফলে আমদানি-রপ্তানির খরচ বাড়বে, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তা পর্যায়ে চাপ তৈরি করবে।
বর্তমানে বন্দরের ৫২টি খাত থেকে মাশুল আদায় করা হয়। এর মধ্যে ২৩টি খাতে সরাসরি ট্যারিফ বৃদ্ধি কার্যকর হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভাড়া, টোল, রেইল, ফি ও মাশুলে নতুন হার চালু হয়েছে। ডলারপ্রতি বিনিময়মূল্য ১২২ টাকা ধরা হয়েছে; ফলে ডলারের মূল্য বাড়লে মাশুলও আরও বৃদ্ধি পাবে।
সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে কনটেইনার পরিবহন খাতে। উদাহরণস্বরূপ, প্রতিটি ২০ ফুট লম্বা কনটেইনারের মাশুল ১১ হাজার ৮৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৬ হাজার ২৪৩ টাকায় দাঁড়িয়েছে—যা প্রায় ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি। আমদানি কনটেইনারের জন্য অতিরিক্ত ৫ হাজার ৭২০ টাকা এবং রপ্তানি কনটেইনারের জন্য ৩ হাজার ৪৫ টাকা বেশি মাশুল দিতে হবে। এছাড়া প্রতিটি কনটেইনার ওঠানামায় গড়ে প্রায় তিন হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও প্রতি কেজিতে ৪৭ পয়সা অতিরিক্ত মাশুল যোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে কনটেইনার পরিবহন খাতেই ট্যারিফ বেড়েছে ২৫ থেকে ৪১ শতাংশ।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছিল। প্রায় চার দশক পর অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, এই মুহূর্তে ট্যারিফ বাড়ানো উচিত হয়নি। আমরা আগেই বলেছিলাম, যদি বাড়াতে হয় তবে ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হোক। কিন্তু এখন এক লাফে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, যা ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, ট্যারিফ বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে এবং সোমবার থেকে তা কার্যকরের চেষ্টা চলছে। তবে বন্দরের সফটওয়্যার ও সিস্টেমে আপডেটের কাজ শেষ হলে পূর্ণাঙ্গভাবে নতুন ট্যারিফ আদায় শুরু হবে।
দেশের আমদানি-রপ্তানিকেন্দ্রিক সমুদ্র বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ এবং কনটেইনার ও পণ্য পরিবহনের ৯৮ শতাংশ সম্পন্ন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এবার সবচেয়ে বেশি ট্যারিফ বেড়েছে কনটেইনার পরিবহন খাতে।



