Logo
Logo
×

সারাদেশ

সীমান্ত নিরাপত্তায় বিজিবির নতুন পদক্ষেপ

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম

সীমান্ত নিরাপত্তায় বিজিবির নতুন পদক্ষেপ

ছবি-যুগের চিন্তা

বাংলাদেশের বহু নৌযান জলসীমা অতিক্রম করে ‘রহস্যজনকভাবে’ মিয়ানমারে অভ্যন্তরে যাতায়ত করছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির রামু সেক্টরের কমান্ডার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তায় বিজিবি নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। যে পদক্ষেপে রাডার থেকে তথ্য সংগ্রহ, ড্রোন, নাইট ভিশন ডিভাইস এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এই প্রযুক্তিতে ধরা পড়ছে বাংলাদেশের নৌযান জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমার যাতায়তের দৃশ্য।

বিজিবির পর্যবেক্ষণের তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, নাফ নদী ও সাগর উপকূলীয় মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও কুয়াকাটা এলাকা দিয়ে মাদক চোরাচালানের দুইটি অন্যতম প্রধান পথ তৈরী হয়েছে। যে পথে অধিকাংশ চোরাচালান হচ্ছে। আর ৮০ শতাংশ মাদকই সাগর উপকূলীয় এলাকা দিয়ে চোরাচালানের ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বিজিবির কাছে রয়েছে। এই রুটগুলো ব্যবহার করে মিয়ানমার থেকে আসা মাদকদ্রব্য শুধু বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করছে না, বরং অন্যান্য দেশেও পাচার হয়ে যাচ্ছে। যা আমাদের দেশের যুব সমাজ ও অর্থনীতির জন্য হুমকি স্বরূপ।

সোমবার দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন বিজিবির উর্মি রেস্ট হাউজের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিজিবির এই সেক্টর কমান্ডার।

সংবাদ সম্মেলনে সীমান্ত নিরাপত্তা, অনুপ্রবেশ, মাদক ও চোরাচালান রোধে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে জানিয়ে গত ১৫ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাদকদ্রব্য উদ্ধারের তথ্য অবহিত করা হয়ে।

এই দুই মাসে ২৮ লাখের বেশী ইয়াবা, প্রায় ১ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস সহ ৮৮ কোটি টাকার বেশী মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এই সময়ে সীমান্ত দিয়ে আসা ২২ টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সেক্টর কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, উদ্ধার করা অস্ত্রগুলো মিয়ানমার থেকে আসা। দেশটির রাখাইন রাজ্য আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানে জড়িয়েছে সশস্ত্র গোষ্টিটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, গত ডিসেম্বর থেকে এই পর্যন্ত সমুদ্র থেকে আরাকান আর্মি হাতে ২২৮ জন জেলে ধরে নিয়ে যাওয়ার তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, আটকদের মধ্যে বিজিবির প্রচেষ্টায় ১২৪ জনকে ফেরত আনা হয়েছে। এখনও ১২ টি ট্রলার সহ ১০৪ জন জেলে আরাকান আর্মির হাতে আটক রয়েছে। যার মধ্যে ৯৫ জন বাংলাদেশী এবং ১৩৩ জন রোহিঙ্গা।

তাদের ফেরত আনতে বিজিবির নিজস্ব কৌশলে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে সেক্টর কমান্ডার বলেন, আরাকান আর্মির সাথে আমাদের অফিশিয়াল কোন যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না। নানা মাধ্যমে কৌশলে যোগাযোগ করতে গিয়ে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের ফেরত আনা সম্ভব হতে পারে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমারে অনুপ্রবেশের পর আটক হয়েছে। আমাদের জলসীমায় এসে আমাদের জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার সাহস কারও নেই।

সাগর পথে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির সক্ষমতা না থাকলেও আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের গোয়েন্দা তথ্য ও ডিজিটাল তথ্য-উপাত্য দিয়ে সাগরে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ নেভী ও কোষ্ট গার্ডকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিজিবি আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম, মাইন বিষ্ফোরণ, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতে সীমান্ত এলাকায় জনসচেতনতামূলক সভা, লিফলেট বিতরণ, ও মাইকিং পরিচালনা করা হচ্ছে।

জনমত তৈরী ও জেলেদের নাফ নদীতে মাছ ধরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম না করার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টিতেও কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি। এছাড়া বিজিবি প্রান্তিক জনসাধারণের জন্য চিকিৎসা সহায়তা, মাইন বিস্ফোরণে আহতদের আর্থিক সহায়তা প্রদান ও সীমান্তের যুবসমাজকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করছে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন