Logo
Logo
×

সারাদেশ

আশুগঞ্জের ইউএনওর বিরুদ্ধে অভিযোগ

ভৈরবের ইজারাদারের কাছে দৈনিক লাখ টাকা ঘুষের দাবি

Icon

সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম

ভৈরবের ইজারাদারের কাছে দৈনিক লাখ টাকা ঘুষের দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ ছড়ার বিরুদ্ধে মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের ইজারাদারের কাছ থেকে দৈনিক এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে ড্রেজার জব্দের সময় ইজারাদারের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগও করেন ভুক্তভোগীরা।

শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে ইউএনও’র বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন অভিযোগ করেন ইজারাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাগিব এন্টারপ্রাইজের মালিক তানভীর আহমেদ নাগিব।

এসময় লিখিত বক্তব্যে তানভীর আহমেদ নাগিব বলেন, ‘চলতি বছরের ১৪ মে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন ১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকায় ভৈরব উপজেলার আগানগর ও সাদেকপুর ইউনিয়নের মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের ইজারা দেয় তাদের প্রতিষ্ঠানকে। ইজারা নেওয়ার পর উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে বৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন তারা। হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ অনুযায়ী নির্ধারিত সীমারেখার ভেতর থেকেই উত্তোলন কার্যক্রম চালানো হয় এবং নিয়মিতভাবে সরকারি কোষাগারে রাজস্বও জমা দেওয়া হয়।কিন্তু এরপর আশুগঞ্জ ইউএনও রাফে মোহাম্মদ ছড়া প্রতিদিন এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতে শুরু করেন। দাবীকৃত অর্থ প্রদান না করায় সম্প্রতি ভৈরব সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার চারটি ড্রেজার ও পাঁচটি বাল্কহেড জব্দ করা হয়।’

এ সময় দুই শ্রমিককে এক বছরের সাজা দেওয়া হয় এবং নির্যাতনের মাধ্যমে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ড্রেজার থেকে বালু বিক্রির দুই দিনের জমা ও অন্যান্য টাকা মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ টাকা নেওয়া হয়, যা প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তানভীর আহমেদ অভিযোগ করেন, আমরা বৈধভাবে ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলন করলেও ইউএনও অযৌক্তিকভাবে চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় আমাদের কোটি টাকার যন্ত্রপাতি জব্দ করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, শ্রমিকদেরও হয়রানি করা হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেঘনা নদীর বালু ব্যবসা এলাকায় কোটি কোটি টাকার বাজার তৈরি করেছে। বৈধ ইজারাদারের পাশাপাশি নানা সময় অবৈধ উত্তোলনকারীরাও সক্রিয় থাকে। এতে প্রায়ই সংঘাতের ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের অভিযানের কারণে অনেক বৈধ ব্যবসায়ীও হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে রেললাইন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র কিংবা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার কাছাকাছি নদী থেকে বালু উত্তোলন করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে স্থাপনার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রশাসনের দাবি, নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয় এবং সীমানা লঙ্ঘনকারী ড্রেজারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। তবে ইজারাদার পক্ষ বলছে, তাদের কার্যক্রম নির্ধারিত সীমানার ভেতরেই সীমাবদ্ধ ছিল। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের অবস্থান ও ইজারাদারের দাবি একেবারেই ভিন্ন। এদিকে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, বৈধ-অবৈধ উত্তোলনের মধ্যে পার্থক্য করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। সীমারেখা লঙ্ঘন হলে কঠোর ব্যবস্থা নিতেই হবে।

অভিযোগ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়ার সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি যুগেরচিন্তাকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ভৈরব ও আশুগঞ্জের দুটি স্থানে নদী থেকে বালু উত্তোলন চলছে। এর মধ্যে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং জাতীয় গ্রিড লাইনের সন্নিকটে বালু উত্তোলন করা হলে তা জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা জাতীয় গ্রিড লাইনের এক কিলোমিটারের ভেতরে যে কেউ বালু উত্তোলন করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভৈরবে তারা ওই সীমার ভেতরে ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলছিল, তাই ড্রেজার ও বাল্কহেড জব্দ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মেসার্স নাগিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও ইজারাদার তানভীর আহমেদ নাগিব। পৌর যুব দলের আহ্বায়ক হানিফ মিয়া, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন মামুন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুল হক সুজন প্রমুখ।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন