নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:১৭ পিএম
কোম্পানি বন্ধের ঘটনায় নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত।
নীলফামারীর উত্তরা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (ইপিজেড) পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে হাবিব ইসলাম (৩২) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাবিব ইসলাম সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের কাজিরহাট গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে এবং ভেনচুরা লেদার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির কর্মী ছিলেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, উত্তরা ইপিজেডের এভারগ্রীন কোম্পানিতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে তাঁরা দুই দিন ধরে আন্দোলন করছিলেন। সোমবার রাতে হঠাৎ করে কোম্পানি বন্ধের নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ইপিজেডের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। এসময় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এক শ্রমিক নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে এবং নীলফামারী–সৈয়দপুর সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তানজিরুল ইসলাম ফারহান জানান, নিহত হাবিব ইসলামকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার বুকে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। হাসপাতালে আহত আরও পাঁচ শ্রমিক চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নীলফামারী সদর থানার ওসি এম আর সাঈদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এভারগ্রীন কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের নোটিশে জানিয়েছে, টানা আন্দোলনের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী ২ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী নোটিশে পুনরায় চালুর কথা জানানো হবে।
এদিকে আন্দোলনরত শ্রমিকেরা ২০ দফা দাবি তুলেছেন। এর মধ্যে রয়েছে— উৎপাদন টার্গেট কমানো, ওভারটাইম নিশ্চিত করা, সময়মতো বেতন-ভাতা প্রদান, ছুটি যথাযথভাবে দেওয়া, আবাসন ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসন, সকাল ৭টার আগে ডিউটি না রাখা, গর্ভবতী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ করা এবং ক্ষুদ্র কারণে চাকরিচ্যুতি না করা।



