প্রভাবশালীদের যোগসাজশে শ্রীপুর কোয়ারিতে পাথর-বালু লুটপাট
সিলেট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
সিলেটের শ্রীপুরসহ বিভিন্ন কোয়ারিতে পাথর-বালু লুটপাট প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাদা পাথর চুরির ভিডিও ভাইরাল হলেও আড়ালে থাকা অন্যান্য কোয়ারিগুলোর অবস্থাও একই রকম করুণ। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও প্রশাসনের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এ লুট। এখন প্রশাসনের নামমাত্র অভিযান ছাড়া দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
শ্রীপুর বাজার থেকে মিনিট দশেক হাঁটার পথেই শ্রীপুর বালু মিশ্রিত পাথর কোয়ারি। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বালু, স্তূপ আকারে রাখা হয়েছে পাথর। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রথমে কোয়ারির সব পাথর লুট করা হয়েছে, পরে পাথরের নিচে থাকা বালুও অবৈধভাবে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসনের দাবি, অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় **২৮ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ** করা হয়েছে। জব্দ করা নিলামযোগ্য বালু ইতিমধ্যে নিলামে দেওয়া হয়েছে। তবে লুট করা বালুর বড় অংশ বাজারে বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, শ্রীপুরের বালু উত্তোলন ও পরিবহন খরচসহ প্রতি ফুটে ১৯-২০ টাকা পড়ে, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা দরে। লাভ বেশি হওয়ায় প্রভাবশালীরা বালু লুটে জড়াচ্ছেন।
পাহাড়ের পাশেই বিজিবি ক্যাম্প থাকলেও পাথর-বালু লুট বন্ধ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ ও বিজিবির উপস্থিতিতেই এসব হচ্ছে। তবে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান দাবি করেন, পুলিশের সামনে পাথর লুট হওয়ার সুযোগ নেই। বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মো. নাজমুল হককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জর্জ মিত্র চাকমা বলেন, নিয়মিত অভিযান চলছে। জব্দ করা বালু নিলামে বিক্রি করা হয়েছে, আর উদ্ধারকৃত পাথর ধাপে ধাপে প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে তিনি দাবি করেন, যেসব পাথর দেখা যাচ্ছে, সেগুলোর অনেকটাই ভারতীয় অংশ থেকে নৌকায় আনা।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান সত্ত্বেও পাথর-বালু লুটপাট বন্ধ হয়নি। বরং প্রভাবশালীদের যোগসাজশে সীমান্তঘেঁষা এসব কোয়ারি থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ নিঃশেষ হওয়ার পথে।



