বছরের পর বছর বন্দরেই আটকে বিপজ্জনক কনটেইনার
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০১:০৯ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বন্দরের শেড ও ইয়ার্ডে বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে বিপজ্জনক পণ্যের শত শত কনটেইনার। সর্বশেষ এক কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তার উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ার পর বিষয়টি নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বর্তমানে বন্দরে তেজস্ক্রিয় পদার্থসহ ১৩টি কনটেইনার এবং রাসায়নিক ও দাহ্য পদার্থভর্তি প্রায় ৩৫০ কনটেইনার পড়ে আছে। এসব পণ্যের মধ্যে বেশ কিছু কনটেইনার ১০–১৫ বছরের পুরোনো।
২০২০ সালে বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণ এবং ২০২২ সালে সীতাকুণ্ড বিএম ডিপোতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বিস্ফোরণের মতো দুর্ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের জমে থাকা এসব কনটেইনারও বড় ধরনের বিপদের কারণ হতে পারে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, তেজস্ক্রিয় কনটেইনারগুলো বিশেষ স্থানে আলাদা করে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় এতে থোরিয়াম–২৩২, রেডিয়াম–২২৬ ও ইরিডিয়াম–১৯২ আইসোটোপ শনাক্ত হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগ স্ক্র্যাপ লোহা ও জিংক-অক্সাইড মিশ্রিত পদার্থবাহী কনটেইনার।
অন্যদিকে রাসায়নিক কনটেইনারগুলোতে রয়েছে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, সালফিউরিক অ্যাসিড, থিনার, সোডিয়াম সালফেট, মিথানল, নাইট্রিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম অক্সাইড, ফার্মাসিউটিক্যালস কাঁচামাল, রং ও টেক্সটাইল শিল্পের কাঁচামালসহ দাহ্য ও বিস্ফোরকজাতীয় পণ্য।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, বিপজ্জনক কনটেইনারগুলো দ্রুত অপসারণের জন্য কাস্টমসকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে কাজের অগ্রগতি ধীর।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন বলেন, গত ৩০ জুলাই ৪২টি পুরোনো কনটেইনার খালি করা হয়েছে, আরও ৫০টি চলতি মাসে খালি করা হবে। তবে দীর্ঘদিন বন্দরে পড়ে থাকা এসব কনটেইনার যে বিপজ্জনক, তা তিনি স্বীকার করেন।
কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ মারুফুর রহমান জানান, তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কনটেইনার খালাস স্থগিত রাখা হয়েছে। বিষয়টি পরমাণু শক্তি কমিশনকে জানানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা সরেজমিন পরীক্ষা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।



