উখিয়ায় আন্দোলনরত চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের লাঠিচার্জ
কক্সবাজার প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ০২:১৯ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের কর্মসূচীতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এ সময় কয়েকজন আন্দোলনকারি আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে জুলাই আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি সহ অন্তত ১৫ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে উখিয়া থানা প্রাঙ্গন ঘিরে রেখেছে আন্দোলনকারিরা।
বুধবার সকাল ৯ টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়া উপজেলা সদর স্টেশনের ফলিয়াপাড়া রাস্তা মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনায় আহত ও হেফাজতে নেওয়া আন্দোলনকারিদের সকলের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নানা সূত্র নিশ্চিত করেছে, আটকদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার অন্যতম সাবেক সমন্বয়ক নেত্রী জিনিয়া শারমিন রিয়া রয়েছেন।
তবে কয়েকজন আন্দোলনকারি চাকুরিচ্যুত শিক্ষক জানিয়েছেন, সকালে উখিয়া সদর স্টেশনের ফলিয়াপাড়া রাস্তার মোড়ে ৪০/৫০ জন ভূক্তভোগী শিক্ষক অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন। তারা কোন ধরণের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি ছাড়া সড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচী অব্যাহত রাখে। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে আন্দোলনকারিদের সরে যেতে নির্দেশ দেয়। এতে পুলিশের নির্দেশ অমান্য করতে থাকলে আন্দোলনকারিদের উপর লাঠিপেটা করা হয়েছে। ঘটনায় ৭/৮ জন আন্দোলনকারি শিক্ষক আহত হন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১০/১৫ জন আন্দোলনকারিকে আটক করে নিয়ে যায়। আহতদের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আন্দোলনকারী বলেন, যাদেরকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে তাদের ছেড়ে দিতে হবে। এ ছাড়াও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে নড়বো না।
কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া কর্মকর্তা) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, 'সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আন্দোলনকারী সরিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা সেখানে কয়েকজনকে হেফাজতে নিয়েছি। তাদের বিষয়ে যাচাই-বাচাই শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আগের দিন চাকরিচ্যুতদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল।’
এর আগে চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা একই দাবিতে সোমবার সকাল ৬ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা উখিয়ার কোর্টবাজার স্টেশন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। এতে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে কয়েক হাজার যানবাহন আটকা পড়ে। প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট তৈরি হয়।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন গত ৩ জুন কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে (আরআরআরসি) লেখা এক চিঠিতে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও পরিচালিত সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। এতে চাকরিচ্যুত হয়েছে ১২৫০ আন্দোলনকারীরা শিক্ষক। তবে স্থানীয়দের চাকরিচ্যুত করা হলেও ক্যাম্পগুলোতে কর্মরত কোনো রোহিঙ্গাকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি।



