তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে
নীলফামারী-লালমনিরহাটে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৯ এএম
ছবি : সংগৃহীত
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৯টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিপৎসীমা ৫২.১৫ সেন্টিমিটারের ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে পানি রেকর্ড করেছে।
এর আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে বিপৎসীমা অতিক্রম করে পানি প্রথমে ৭ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে, পরে কমে ৪ সেন্টিমিটারে নেমে আসে। কিন্তু রাতের বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ভোরের দিকে আবারও বেড়ে ১১ সেন্টিমিটার ওপরে পৌঁছায়।
পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাট ও নীলফামারীর অন্তত ৪৫টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। নীলফামারীর ডিমলার পূর্ব ও পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের গ্রাম ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। একইভাবে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, জুলাইয়ের শেষ দিকে ও আগস্টের শুরুতে দুই দফা পানি বৃদ্ধির পর এটি তৃতীয় দফার বন্যা। তারা ত্রাণের বদলে স্থায়ী সমাধান হিসেবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি করছেন।
আদিতমারীর গোবর্ধন গ্রামের মতিয়ার রহমান জানান, সাত দিন ধরে রান্না করতে পারেননি। খুনিয়াগাছের কৃষক আব্দুল আলীমের অভিযোগ, বারবার বন্যায় ধান, পাট, মাছ সব নষ্ট হয়ে গেছে, অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন, চরের অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং স্বেচ্ছাশ্রমে নদীর চ্যানেল বন্ধের চেষ্টা চলছে।
পাউবো জানিয়েছে, আগামী দুই দিন ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকতে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডালিয়া ব্যারাজের সব ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
চলতি মৌসুমে জুলাইয়ের ২৯ তারিখে প্রথম দফা ও ৩ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। এবার ১৩ আগস্ট থেকে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে, এবং এখনো বিপদের আশঙ্কা কাটেনি।



