পদ্মা ও গড়াই নদীতে পানি বৃদ্ধি, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০১:১৮ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ভারী বর্ষণ ও ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে কুষ্টিয়ায় পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১২.৮৯ সেন্টিমিটার এবং গড়াই নদীতে ১১.২৭ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার মাত্র এক সেন্টিমিটার নিচে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে।
এতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৪০-৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চরাঞ্চলের নিম্নভূমি ও ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় মরিচ, পাট ও ধানের মতো ফসল নষ্ট হয়েছে। রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গোখাদ্যের সংকটে গবাদিপশু নিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। চরের ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান বন্ধ রাখতে হয়েছে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের তথ্যমতে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার বিপৎসীমা ১৩.৮০ সেন্টিমিটার এবং গড়াই নদীর বিপৎসীমা ১২.৭৫ সেন্টিমিটার। বর্তমানে উভয় নদীর পানি বিপৎসীমার ঠিক নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জানান, নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, নদীর ওপারের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস, যাদের অধিকাংশই এখন পানিবন্দি।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ জানান, দুই ইউনিয়নের ১৩টি বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে, প্রয়োজনে আরও বিদ্যালয়ে কার্যক্রম স্থগিত করা হবে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে, পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ আছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হবে।
পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুজ্জামান জাহিদ জানিয়েছেন, পদ্মা ও গড়াই নদীতে পানি বাড়ছে, তবে এই প্রবণতা কতদিন চলবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।



