Logo
Logo
×

সারাদেশ

কাপ্তাই বাঁধ : ছাড়া হয়েছে সেকেণ্টে ৯০ হাজার কিউসেক পানি

Icon

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি :

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম

কাপ্তাই বাঁধ : ছাড়া হয়েছে সেকেণ্টে ৯০ হাজার কিউসেক পানি

ছবি-যুগের চিন্তা

প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বিশাল কাপ্তাই হ্রদে পানির প্রবাহ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ফলে কাপ্তাই বাধঁ বিপৎসীমায় পৌঁছে গেছে। হ্রদের পানির স্তর প্রায় ১০৯ এমএসএল পৌছে গেছে। যার ফলে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট তিন ফুট করে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৫৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে।

এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৩২ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৯০ হাজার বিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। যার ফলে ভাটিতে কর্ণফুলী নদীতে অতিরিক্তি পানি বেড়ে যাওয়ায় চন্দ্র ঘোনা ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

কর্ণফুলী নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা হতে চন্দ্রঘোনা-রাইখালী নৌ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে নদীর দুই পাশে যাত্রী সাধারণ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী কীর্তি নিশান চাকমা বলেন, কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ের ১৬ টি গেট ছাড়ার ফলে কর্ণফুলী নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা হতে এই নৌ রুটে ফেরি চলাচল আপাতত বন্ধ রয়েছে।

টানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলার নিচু এলাকা। এতে প্রায় ৩০/৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তবে সরকারিভাবে তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায় বাঘাইছড়ি উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়ন যথাক্রমে বঙ্গলতলী, মারিশ্যা, রূপকারী, খেদারমারা, বাঘাইছড়ি ও আমতলী ইউনিয়নের অনেক গ্রাম ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫টি ওয়ার্ড পানিতে তলিয়ে গেছে বন্ধ হয়ে গেছে অভ্যন্তরিণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। কাচালং নদী এবং কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির ফলে এই নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। তবে বিকালের দিকে কিছু কিছু এলাকায় পানি কমে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আখতার জানান, দুর্গতদের জন্য ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বন্যার্তদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করতে। এছাড়া পানিবন্দীদের শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।


লংগদু উপজেলার মাইনী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার ঝরনা টিলা, ভাসাইন্যাদম ইউনিয়ন, বগা চত্বর ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া, গুলশাখালী ইউনিয়নের সোনাগাঁও পাড়া, মাইনী ইউনিয়নের এফআইডিসি বড় কলোনি পানিতে তলিয়ে গেছে। বিলাইছড়ি উপজেলা সদর, ধূপ্পারছড়, বহলতলী,বাঙ্গালকাটা এলাকাসহ নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতেও কাপ্তাই হ্রদের পানি প্রবেশ করেছে।

এছাড়া জেলার নানিয়ারচর ও রাঙ্গামাটি সদরের নিচু এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রুহুল আমিন বলেন, জেলায় ২৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে । এই পর্যন্ত জেলার বাঘাইছড়ি ও লংগদুতে ১৮২টি পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থাকারীদের জন্য শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া কী পরিমাণ মানুষ পানিবন্দী সেই তালিকা তৈরির কাজ চলছে। সেই অনুযাযী খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হবে।

কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান বলেন, হ্রদের পানি ১০৮ এমএসএল (মিনস সি লেভেল) অতিক্রম করার পর বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় আড়াই ফুট পর্যন্ত গেট খুলে দেয়ার পরও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রাত ১১টায় হ্রদের পানির স্তর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৮.৭৯ এমএসএল। পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএলের একেবারেই কাছাকাছি চলে আসায় ঝুঁকি এড়াতে গেট তিন ফুট পর্যন্ত খুলে দেওয়া হয়েছে। 

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন