
প্রিন্ট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:০৬ এএম
রৌমারীতে তিনজনকে হত্যা: পুলিশের গাফিলতির অভিযোগে থানার সামনে বিক্ষোভ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম

ছবি : যুগেরচিন্তা
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই ভাই ও এক ভাতিজাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতদের স্বজন ও এলাকাবাসী। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার আগে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন আগে সংঘর্ষের সূত্রপাত এক পক্ষের বীজতলার ধানের চারা খেয়ে ফেলার ঘটনায়।
শনিবার (২৬ জুলাই) নিহত তিনজনের দাফন শেষে বিক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানান। এ সময় তারা রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লুৎফর রহমানের বিচার দাবি করেন। নিহতরা হলেন- ভন্দুর চরের বাসিন্দা বুলু, ফুলবাবু ও তাদের ভাতিজা নুর আলম।
জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই শনিবার সন্ধ্যায় ভন্দুর চরের রব্বানির ছেলে রাজু আহমেদের গরু শাহাজামালের বীজতলার ধানের চারা খাওয়ায় শাহজামালের লোকজন রেগে গরু বেঁধে রাখতে বলেন। এরই জেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ২০ জনের একটি দল শাহজামালের বাড়ি ভাঙচুর করে। এতে বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ আহত হয়। এ ঘটনায় ২০ জুলাই আহত নুরজাহান বাদী হয়ে রৌমারী থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগ আমলে না নিয়ে বাদীপক্ষকে মীমাংসা করে নিতে বলে পুলিশ।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র জমির আশপাশের জঙ্গলে লুকিয়ে রাখেন তারা। বুলু, ফুলবাবু, নুর আলম, মজিবর ও আরিফ জমিতে সেচ দিতে গেলে ওৎপেতে থাকা আপেল, আঙ্গুর, রাজু, ভুলু মিয়া, মিঠু, ইদু, নুর মোহাম্মদসহ অনেকে তাদের চারদিক ঘিরে ফেলে। তারা পালানোর চেষ্টা করলে বুলু, নুর আলম ও ফুলবাবুকে এলোপাতাড়িভাবে কোপায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। তাদের বাঁচাতে গেলে মজিবর, আরিফ, নুরজাহান, ফুলুরানীসহ কয়েকজনের উপরেও হামলা চালানো হয়ে। এ ঘটনায় রৌমারী থানায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করে শাহজামাল নামে এক ব্যক্তি। অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহার নামীয় আসামি রাজু মিয়া, আপেল মিয়া, নুর মোহাম্মদ, সবেনী বেগম ও কিনজে বেগমসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শনিবার বিক্ষোভ চলাকালে নিহত বুলুর মেয়ে শাপলা খাতুন, বোন শরিফা বেগম, ফুলবাবুর স্ত্রী ফুলুরানী, ভাই শাহজামাল, ওয়াজেদ আলী অভিযোগ করে বলেন, প্রথম দিনের ঘটনায় আমরা অভিযোগ করেছি। ওই অভিযোগে ওসি মামলা নিলে এই ঘটনা ঘটতো না। পুলিশ ওদের পক্ষ নিয়েছিল। এই সাহসে ওরা এটা করেছে। এসময় এলাকাবাসীও একই অভিযোগ তোলেন। তারা বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের নিকট বিচারের দাবিতে এসেছি। খুনিদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘থানা ঘেরাওয়ের মতো কিছু ঘটেনি। তারা এসেছিল গেটের সামনে সব আসামির ফাঁসির দাবি নিয়ে। এ ঘটনার পুলিশ তৎপর রয়েছে। এ পর্যন্ত ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার মধ্যে চার আসামি এজাহার নামীয়। বাকী আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত।