হাত-পা বেঁধে স্ত্রীকে নির্যাতন, স্বামী আটক
পঞ্চগড় প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৩ পিএম
ছবি-যুগের চিন্তা
মাত্র ১৫০ টাকার একটি কাপড় কেনাকে কেন্দ্র করে স্ত্রীকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন স্বামী আনিছুর রহমান। পরে অজ্ঞান হয়ে পড়লে রশি দিয়ে হাত-পা বাধা অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গত সোমবার বিকেলে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
এই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বর্তমানে রয়েছেন মোছাঃ রেনু আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূ।
নির্যাতিত ওই গৃহবধূ সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের, শিংরোড দেওনিয়াপাড়া এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলাম এর মেয়ে। ১২ বছর আগে হাড়িভাসা বড়বাড়ি এলাকার মোঃ মন্তাজ আলীর ছেলে আনিছুর রহমান এর সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়। এর মধ্যেই রেনু আক্তার এর গর্ভে দুটি সন্তান জন্ম গ্রহণ করেন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিয়ের পর থেকেই স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে রেনু । এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনায় একাধিক বার বিচার সালিশ হয়। স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, মারপিটের কারণে রেনু আক্তার এর কখনো হাত কখনো পা ভেঙ্গেছে। ভুক্তভোগী রেনুর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্বামীর কাছে পায়জামার কাপর কিনতে চাওয়ায় বেধড়ক মারপিট শুরু করে। কখনো বালিশ চাপা, কখনো গলা টিপে ধরে আবার কখনো এলোপাথারী কিল ঘুষি মারতে থাকে।
একপর্যায়ে পড়নের ওড়না দিয়ে পা বেধে মারতে থাকে। এর পর আমার আর কিছুই মনে নাই। এ ঘটনায় গৃহবধূর মা ফরিদা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, আমার জামাই আমাকে ফোন দিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। আমি কারণ জানতে চাইলে ফোন কেটে দেয়। পরে আমার ছেলেকে ফোন দিয়ে বলি একটু খবর নিতে। পরে আমার ছেলে ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখে পা বাধা অবস্থায় আমার মেয়ে পড়ে আছে। আমার জামাই বাড়িতে ছিল না। পরে আমার ছেলে আমার জামাইকে ফোন করলে তার সাথেও খারাপ আচরণ করে আমার মেয়ে জামাই।
তখন ভয় পেয়ে আমার ছেলে সেখান থেকে চলে আসে। পরক্ষণেই ৯৯৯ জরুরি সেবা নম্বরে কল করে পুলিশের সহযোগিতা চাই। এর মধ্যেই আমার মেয়ে মরে গেছে ভেবে তারা জামাই এর বোন মনছুরা বেগম ও স্বামী রবিউল এর বাসা কামাত কাজলদীঘি ইউনিয়নের তালমা চছপাড়া নিয়ে যায়। সেখান থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং আনিছুর রহমন কে আটক করে। এর মধ্যে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া সত্ত্বেও কোন প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দেওয়ার চেষ্টা করে।
ভিকটিম এর বাবা বাদী হয়ে করা মামলার কার্যকারিতা নিষ্ক্রিয় করতে এই চক্রান্ত করা হয়েছে মর্মে ধারণা করছেন ভিকটিম এর পরিবার। তবে ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যাপারে কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) ডা. মো. আবুল কাশেম। তবে এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন ভিকটিমের পরিবার।



