রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি এসএমজি ও নগদ ১৪ লাখ টাকাসহ আটক ৪
কক্সবাজার প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম
ছবি : রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি এসএমজি ও নগদ ১৪ লাখ টাকাসহ আটক ৪
কক্সবাজারে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘অস্ত্রের চালান লেনদেনের’ সময় বিদেশি একটি এসএমজি ও নগদ ১৪ লাখ টাকাসহ আলোচিত ‘ডাকাত নবী হোসেন বাহিনীর’ চার সদস্যকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।
উদ্ধার করা অস্ত্রটি মিয়ানমার সেনা বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করে থাকে বলে তথ্য দিয়েছেন, আইন শৃংখলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা।
রোববার সন্ধ্যায় উখিয়া উপজেলার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি-৬ ব্লকে এ অভিযান চালানো হয়েছে। মধ্যরাতে উখিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ আরিফ হোছাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া স্থানীয় যৌথ বাহিনীর ক্যাম্পের অধিনায়কের বরাতেও গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতেও তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আটকরা হল, উখিয়ার বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি-১৪ ব্লকের নুর বশরের ছেলে মনসুর আহমদ (৩২) ও একই ক্যাম্পের সি-১৬ ব্লকের মো. নাজিমুদ্দিনের ছেলে ইয়াছের আরাফাত (৩৫) এবং বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-ব্লকের মো. ইউছুফের ছেলে মো. আনাস (৩০) ও একই ক্যাম্পের সি-৬ ব্লকের ছৈয়দ আহমেদের ছেলে কেফায়েত উল্লাহ (৩৫)।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি-৬ ব্লকে জনৈক ইলিয়াছ নামের পেশাদার ব্যবসায়ির কাছে নবী হোসেন বাহিনীর কতিপয় সদস্যরা বিদেশি একটি চালান লেনদেনের খবর পায় আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ( এপিবিএন ) ও সেনা বাহিনীর সদস্যদের একটি যৌথ দল সেখানে অভিযান চালায়। এতে সন্দেহজনক বসত ঘরটি ঘিরে ফেললে এক ব্যক্তি কৌশলে পালিয়ে গেলেও ৪ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
“ পরে আটকদের কাছ থেকে ‘ইউজেটআই এসএমজি’ নামের একটি বিদেশি অস্ত্র এবং লেনদেনের জন্য আনা নগদ ১৪ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। “
উদ্ধার করা অস্ত্রটি নবী হোসেনের গোপন আস্তানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
উখিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ আরিফ হোছাইন জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিদেশি অস্ত্র ও নগদ টাকাসহ ৪ জন রোহিঙ্গা দূর্বৃত্তকে আটকের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বার্তা পাঠিয়ে অবহিত করেছেন। তাদের মধ্যরাত ( পৌণে ৩ টা ) পর্যন্ত থানায় হস্তান্তর করা হয়নি।
ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে প্রেরিত বার্তায় অবহিত করা হয় বলে জানান তিনি।
আইন শৃংখলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, নবী হোসেন সীমান্তে মাদক ও অস্ত্রপাচারের অন্যতম মূলহোতা। আগে সে নিজের নামে বাহিনী গড়ে তোলে সীমান্ত ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রিত করলেও গত বছরখানেক আগে থেকে ‘আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি’ ( এআরএ ) এর প্রধান কমান্ডার হিসেবে কাজ করছে।
আগে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে অবস্থান থাকলেও নবী হোসেন সম্প্রতি উখিয়ার বালুখালী ৮-ইস্ট নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আস্তানা গড়ে তুলেছে। সেখানে সে অবৈধভাবে অবস্থান করে অপরাধকর্ম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রোহিঙ্গা যুবকদের অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সে সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছে মূর্তিমান আতংকে রূপ নিয়েছে।



