
প্রিন্ট: ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৩ এএম
নরসিংদীতে মানববন্ধনে বালু দস্যুদের গুলিবর্ষণ

নরসিংদী প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম
-686bd76194317.jpg)
ছবি-যুগের চিন্তা
নরসিংদীর রায়পুরার মির্জারচরে বালু দস্যুরা নীরিহ গ্রামবাসীদের উপর গুলিবর্ষণ ও সশস্ত্র হামলা এবং সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। সোমবার সকালে উপজেলার মির্জারচর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক আতাউর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক ওয়ারেন্ট অফিসার মিজানুর রহমান, মির্জারচর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার রহম আলী, ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শাহ আলম, ডাক্তার কবীর হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মনির হোসেন, সমাজ সেবক জাহাঙ্গীর আলম, এড.মাহফুজুর রহমান, জালাল উদ্দিন মাষ্টার প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, মেঘনা নদী থেকে চম্বুক ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি বালু দস্যু বাহিনী। মির্জার চর ইউনিয়নের শান্তিপুর, কান্দাপাড়া, তাতুয়া পাড়া, লক্ষীপুর, বালুর চর, পূর্ব পাড়া এলাকার মেঘনা নদীর তীরবর্তী শত শত বাড়িঘরের হাজারো নারী-পুরুষ শিশু নদীভাঙ্গনে এলাকা থেকে ভিটা মাটি ও জমিজমা হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। বর্তমানে যারা নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করছেন তারা এখন বালু উত্তোলনকারী দস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ট। কয়েক বছর যাবত বালু দস্যুরা নদীতে চম্বুর ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় গ্রামবাসীরা এখন ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে।
এর আগে গত শনিবার (৫ জুলাই) মির্জারচর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের লোকজন সম্মিলিতভাবে তাদের ঘরবাড়ি, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, স্কুলগৃহ তথা পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষার্থে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আলোচনা সভা এবং মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে। প্রথম পর্যায়ে গ্রামবাসীরা শান্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আলোচনা সভা শেষ করে মেঘনা নদীর তীরে মানববন্ধন কর্মসূচী শুরু করে। এসময় বালু উত্তোলনকারী দস্যুরা মানবন্ধন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারীদের উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলি বর্ষণ ও হামলা চালিয়ে কর্মসূচী বানচাল করে দেয়। অতর্কিত গুলিবর্ষণে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা এদিক সেদিক দৌড়ে প্রাণ রক্ষা পেলেও অনেকে গুরুতর আহত হয়। এসময় এলাকাবাসীর অনুরোধে মানববন্ধনের রিপোর্ট করতে যাওয়া দুইজন সাংবাদিকের উপরও চড়াও হয় বালু দস্যুরা। এসময় সাংবাদিকদ্বয় নানা কৌশল অবলম্বন করে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে সেখান থেকে অক্ষত অবস্থায় চলে আসেন।
এলাকাবাসী এ ধরণের বর্বরোচিত পৈশাচিক ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসী বালু দস্যুদের কঠোর শাস্তির দাবি করে নরসিংদী এবং ব্রাহ্মনবাড়িয়ার জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন জানিয়েছেন।
এব্যাপারে নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ব্যাপারটি জেলা প্রশাসন অবগত রয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনসহ সকল আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে দ্রুতই বালু দস্যুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।