
প্রিন্ট: ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৪:১৬ পিএম
দখল করাই নেশা সাইফুলের, প্রতিবাদ করলেই দেন মামলা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০২:৩৩ পিএম

ছবি - কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় জমি দখলের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধনে
দখল বাজি যেন নেশা হয়ে গেছে কিশোরগঞ্জ জেলা কোর্টের জজের গাড়িচালক মোঃ সাইফুল ইসলামের। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নিজের আত্মীয়ের জমিজমা পর্যন্ত দখল করেছেন৷ তার ক্ষমতার অপব্যবহারে এখন অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে মানুষকে হয়রানি করেই যেন বিকৃত সুখ খুঁজে পায় সাইফুল৷ তার জুলুমের শিকার হাওয়া নিরীহ মানুষের আর্তনাদ যেন থামছেই না। অবস্থা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে 'বুক ফাটে তো মুখ ফাটে না অবস্থা৷
জজের গাড়িচালক হিসেবে তিনি দাপট দেখিয়ে এসব অপকর্মে লিপ্ত বলেও স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়৷
ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে এলাকার সাধারণ মানুষসহ নিজের সৎবোনের পুকুরসহ জায়গা জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে কিশোরগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের ড্রাইভার মোঃ সাইফুল ইসলাম বিরুদ্ধে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষের জমি দখল করলেও কেউ প্রতিবাদ করতে পারেন না। প্রতিবাদ করলেই মামলার জালে জড়িয়ে দেন তিনি। এভাবেই আইনের অপব্যবহার করে মানুষকে ফাঁসিয়ে শায়েস্তা করে যাচ্ছেন তিনি৷ এলাকায় এখন মামলাবাজ সাইফুল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি৷ যারাই তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে তারাই তার টার্গেটে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷
এসব বিষয় নিয়ে রবিবার (৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের জনতা বাজার (মায়াকানন পার্কসংলগ্ন) এলাকায় এলাকাবাসীর ব্যনারে আয়োজিত মানববন্ধনে এ অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ রয়েছে,সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ জমি দখলের প্রতিবাদ করলে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী মোছাম্মৎ ছালেহা বেগম বলেন, আমাকে সাইফুল মারধর করেছে, আমাদের মোট ২৭ শতাংশ জমি সে জমি থেকে আমাদের বেদখল করেছে সাইফুল। আমি তাকে বলছি আমরা এতিম সন্তানাদি নিয়ে এখানে থাকি। তুমি এ জায়গা দখল করতে আইসো না। সে আমার কথা শুনে নাই, আমার বৃদ্ধ মা তাকে বুঝায়া বলে, থানায় দরবার হইছে, আমার ছেলের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দিছে। আমি সাইফুলের বিচার চাই। আমার জায়গা আমি ফেরত চাই।
ভুক্তভোগী মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, আমার নামে খারিজ করা সম্পত্তি আমার সৎমামা আমার জায়গা থেকে জোরপূর্বক বেদখল করছে। জজকোর্টে চাকরি করে বিধায় প্রভাব খাটিয়ে আমার নামে মিথ্যা মামলা দেয়, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কথা সাইফুল ইসলাম মানেন না। আমি আমাদের জমি ফেরত চাই। ২০১১ সাল থেকে সে আমাদের সাথে এ অন্যায় করে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী আকলিমা আক্তার বলেন, সাইফুলের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিছিলাম সে কারণে তার মা,বউ, ভাগ্নি ও তার শালি সকলে মিলে আমাকে মারতে আসছিল। আমাকে যেখানে দেখে সেখানেই মারধরের হুমকি দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, জেলা জজের ড্রাইভার সাইফুল ইসলাম নিরীহ খায়রুলের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে৷ তাদের জায়গা জোরপূর্বক দখল করেছে। এমনকি সাইফুল আমার সাথেও প্রতারণা করেছে, এ প্রতারকের হাত থেকে আমরা রেহাই চাই।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের ড্রাইভার মোঃ সাইফুল ইসলামের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি।