
প্রিন্ট: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৭ পিএম
ভুলুয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন বিএনপির দুই নেতার, ঝুঁকিতে আশ্রয়ন প্রকল্প

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৭:২২ পিএম
-6867d58e323cf.jpg)
ছবি- যুগের চিন্তা
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ভুলুয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির দুই নেতার বিরুদ্ধে। গত দুই সাপ্তাহ ধরে দিন-রাতে একাধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে তারা এ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় নদীর তীরে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরবাড়ি ও বাসিন্দারা ঝুঁকিতে রয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ,কয়েকদিন ধরে অবৈধভাবে এ কার্যক্রম চললেও প্রশাসন তা বন্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। স্থানীয় ভূমি অফিসের দাবি,বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তা না মেনে বিএনপি নেতারা ক্ষমতার প্রভাবে কোন তোয়াক্কা করছেন না।
জানা গেছে, চরকাদিরা ইউনিয়নের চরপাগলা গ্রামে ভূলুয়া নদীর তীরে সরকার নির্মিত ডাক্তারপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে কয়েক শতাধিক ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছেন। কিন্তু ওই আশ্রয়ণের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ভূলুয়া নদী থেকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনেয়ার হোসেন হিরন হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মেম্বারের নেতৃত্বে গত দুই সপ্তাহ ধরে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন একাধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা এ বালি ট্রাকযোগে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন। এমনকি ওই এলাকায় নির্মাণাধীন একটি সরকারি প্রকল্পেও ওই বালি তারা বিক্রি করছেন।
শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নদীর তীরে একাধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের মচ্ছব চলছে। কয়েক একর জমির উপর বালুর বড় বড় স্তুপ দেখা গেছে। ওই বালু ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এসময় বালু কারা উত্তোলন করে মেশিন অপারেটরদের কাছে জানতে চাইলে তারা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হিরন হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক রহিম মেম্বার ও সাবেক ছাত্রনেতা আবুল কালাম আজাদের নাম বলেন।
এলাকাবাসীরা জানান, রাজনৈতিক দলের নেতারা এখনই ক্ষমতায় না থেকেও দাপট দেখিয়ে নদীর বালু বেপরোয়াভাবে উত্তোলন করছেন। তারা দিনরাত ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে বালু তুলে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এতে নদীর তীরবর্তী আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ আশপাশের ঘরবাড়ি ও জমি ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ছে।
তাদের অভিযোগ, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নাকের ডগায় দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু তোলা হলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বালু উত্তোলনের ফলে তারা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে অল্প সময়ের মধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলো মাটিতে দেবে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে চর কাদিরা ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ার হোসেন হিরনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি তবে অপর অভিযুক্ত ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মেম্বার দাবি করেন,এ বালু উত্তোলনের সাথে তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
এদিকে এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা শফি উদ্দিন মাহমুদ দিপু জানান, বারবার নিষেধ করা হলেও অভিযুক্তরা কোনো আইন মানছেন না। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আরাফাত হোসাইন বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই।খুব শিঘ্রই সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে।