
প্রিন্ট: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪৩ এএম
পাগলা মসজিদে দেশ-বিদেশ থেকে দান করা যাবে অনলাইনে

সাইফুল হক মোল্লা দুলু, কিশোরগঞ্জ :
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৭:০১ পিএম
-6867d08f21602.jpg)
ছবি-যুগের চিন্তা
আনুষ্ঠানিক ভাবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সেরের ওয়েবসাইট এবং অনলাইল ডোনেশনের উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার (০৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ চত্বরে প্রজেক্টরের মাধ্যমে (www.paglamosque.org) এ ওয়েবসাইটটির উদ্বোধন করেন পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্সের সভাপতি এবং কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।
এর মাধ্যমে দেশ-বিদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসে মানুষ মসজিদটিতে তার দানের টাকা পাঠাতে পারবেন। এছাড়া ওয়েবসাইটটির মাধ্যমে পাগলা মসজিদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, নামাজের সময়সহ বিভিন্ন তথ্য জানা যাবে।
শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি গড়ে ওঠে। কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করে থাকেন। মানুষ টাকাপয়সা ছাড়া স্বর্ণালংকার দান করেন। এ ছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে কিছু অসাধু চক্র পাগলা মসজিদের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছে। অনেকেই দান করতে চাইলেও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম না থাকায় দান করতে পারছিলেন না। ‘দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়’-এমন বিশ্বাসেই দেশ-বিদেশের মানুষ পাগলা মসজিদে দান করতে আসেন। আর সেই বিশ্বাসকে আরও সহজ, নিরাপদ আর ডিজিটাল করতে এবার চালু করা হয়েছে অনলাইন ডোনেশন ওয়েবসাইট।
জনশ্রুতি আছে, প্রায় আড়াইশ বছর আগে একজন আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা চরে। ওই পাগল সাধকের মৃত্যুর পর এখানে নির্মিত মসজিদটি পাগলা মসজিদ হিসেবে পরিচিতি পায়। পাগলা মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এ মসজিদে দান করে থাকেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এখানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। প্রতি তিন মাস অন্তর খোলা হয় দান সিন্দুক। সেখানে পাওয়া যায় টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, বিদেশি মুদ্রা এমনকি চিঠিপত্রও। সর্বশেষ ২০২৫ সালের (১২ এপ্রিল) খোলা হয় দানসিন্দুক। ওই সময় মসজিদের ১১টি সিন্দুক থেকে রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া যায়, যা দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দানের ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ বলে দাবি করা হচ্ছে।